সারেং বউ: ‘স্মৃতিটুকু থাক’

বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি কখনো সাত ভাইয়ের এক বোন চম্পা কিংবা কিরণমালা। তিনি মতির ময়না, সুজনের সখি, দেবদাসের পার্বতী কিংবা সারেং বউ। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে কবরী।
সারাহ কবরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি কখনো সাত ভাইয়ের এক বোন চম্পা কিংবা কিরণমালা। তিনি মতির ময়না, সুজনের সখি, দেবদাসের পার্বতী কিংবা সারেং বউ। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে কবরী।

সেই মিষ্টি মেয়ে জীবনের অনেক চড়াই-উতরাই কঠিন সময় পার করে আসলেও হার মানলেন করোনার কাছে। আজ শনিবার ভোররাতে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী পাড়ি জমান অনন্তলোকে।

সারেং বৌ’র সারেং অসুস্থ। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তখন সারেংকে রেখে চলে গেলেন সারেং বৌ।

তিনি নিজেকে শুধু সেলুলয়েড বন্দি করে রাখেননি। দেশ মাতৃকার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, অভিনয়ের পাশাপাশি ছবি পরিচালনা করেছেন, চলচ্চিত্রের জন্য গানও লিখেছেন, রাজনীতি করেছেন, হয়েছেন সংসদ সদস্য।

কীভাবে মিনা পাল থেকে কবরী হলেন, কবরী থেকে বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে হলেন? সেটা মলাট বন্দিও করেছেন তিনি। লেখক হিসেবে আত্মজীবনী লিখেছেন ‘স্মৃতিটুকু থাক’।

এক কথায় পরিপূর্ণ জীবন।

চারদিকে যখন উর্দু ছবির জয়জয়কার সেই সময় মাত্র ১৩ বছর বয়সে ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের আস্থাভাজন নায়িকা। স্বাধীনতার পূর্বেই তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে হয়ে ওঠেন সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার নায়িকা হয়েছিলেন তিনি।

নায়ক রাজ রাজ্জাক কিংবা বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই সবার সঙ্গেই ছিল তার নজরকাড়া অভিনয়। তবে রোমান্টিক অভিনয়ে তার জুড়ি ছিল না। তাই বাংলার মানুষ তাকে আজো ডাকে মিষ্টি মেয়ে বলে। তারপরে আজ পর্যন্ত আর কোনো অভিনেত্রী বাংলা চলচ্চিত্রে পাননি এই খেতাব।

তার বিপরীতে অভিনয় করা মানেই নায়ক হিট। তার বিপরীতে অভিষেক হয় জাফর ইকবাল, ফারুক, আলমগীর, উজ্জ্বল ও সোহেল রানার। নায়িকাদের মধ্যে এমন রেকর্ড আর কারো নেই।

তবে যখন আস্তে আস্তে অনিয়মিত হয়ে পরেন চলচ্চিত্রে, তখন ‘আয়না’ ছবি পরিচালনা করে পরিচালক হিসেবে হাজির হন তিনি।

বাংলায় প্রেম নিবেদনের চিরন্তন গান ‘সুজন সখি’ সিনেমার বিখ্যাত গান ‘সব সখিরে পার করিতে’ গানটির সঙ্গে ঠোট মিলিয়ে ছিলেন কবরী।

তিনি তার ভক্তদের রেখে পাড়ি জমালেন অনন্তলোকে। নীল আকাশের নীচে সবাইকে রেখো তিনি চলে গেলেন নীল আকাশের ওপারে। কবরীর বইয়ের ভাষায় বলতে চাই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।

আরও পড়ুন:

চলে গেলেন কবরী

Comments