বাংলাদেশকে ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দিতে চায় চীনের সিনোফার্ম

বাংলাদেশকে করোনাভাইরাসের ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীনের ওষুধ-প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু যখন ঊর্ধ্বমুখী, এমন সময়ে সিনোফার্ম এই প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে করোনাভাইরাসের ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীনের ওষুধ-প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু যখন ঊর্ধ্বমুখী, এমন সময়ে সিনোফার্ম এই প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ছয় ধাপে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা অনুযায়ী ভ্যাকসিন দিতে না পারায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রাখতে ভ্যাকসিনের বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে সরকার।

কর্মকর্তারা আরও বলেন, সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কয়েকদিন আগে বাংলাদেশকে ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীনের সিনোফার্ম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চীনের সিনোফার্ম একটি বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে করোনার ৬০ লাখ ডোজ বিবিআইবিপি-কোরভি ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। সমঝোতা চলছে। ভ্যাকসিনের মূল্য, কখন দিতে পারবে এবং কতগুলো দিতে পারবে— এই বিষয়গুলো আমরা জানতে চেয়েছি।’

‘সিনোফার্ম এই তথ্যগুলো দিলেই আমরা চীনের ভ্যাকসিন কেনার দিকে অগ্রসর হতে পারব’, বলেন তিনি।

২০২০ সালের শুরুতে চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস বিবিআইবিপি-কোরভি নামে করোনাভাইরাসের ইনঅ্যাকটিভেটেড ভ্যাকসিন তৈরি করে। চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর, পাকিস্তানসহ বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশ এই ভ্যাকসিনটি ব্যবহার করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেয়নি। তবে, ডব্লিউএইচওর উপদেষ্টা প্যানেল বলেছে, সিনোফার্ম তাদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার মাত্রার ওপর তথ্য উপস্থাপন করেছে।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সিনোফার্ম জানায়, তাদের ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এরপরই চীন সরকার ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। ডিসেম্বরেরই শুরুর দিকে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয় আরব আমিরাত। তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের অন্তর্বর্তীকালীন ফলের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ৮৬ শতাংশ।

এ ছাড়াও, বাংলাদেশ সরকার রাশিয়ার স্পুতনিক-ভি ভ্যাকসিনের জন্য যোগাযোগ করছে। নিজ দেশের ভেতরে ব্যবহারের জন্য ২০২০ সালের আগস্টে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় রাশিয়া।

রাশিয়ার ভ্যাকসিনের আপডেট জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। আলোচনা চলমান রয়েছে।’

স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত সরকার দুই দফায় মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত।

বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সেরাম আমাদেরকে জানিয়েছে যে, তারা (ভ্যাকসিন) রপ্তানি করতে প্রস্তুত। কিন্তু, এজন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র প্রয়োজন। সেরাম এখনো সে ছাড়পত্রটি পায়নি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চলমান টিকাদান কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্যে আমরা একই ধরনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’

আরও পড়ুন:

ভারত সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় বাংলাদেশে টিকা পাঠাতে পারছে না সেরাম

অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়ায় অনিশ্চয়তা: অন্য উৎস খুঁজছে সরকার

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago