লালমনিরহাটে বিজিবির বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ

লালমনিরহাটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কুলাঘাট ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে মারধর করার পর মাদক মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক শাহীনকে হাত ও কোমরে রশি বেঁধে নেওয়া হয় লালমনিরহাট সদর থানায়। ছবি: এস দিলীপ রায়

লালমনিরহাটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কুলাঘাট ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে মারধর করার পর মাদক মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম শাহীন। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও জনকণ্ঠের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি এবং স্থানীয় মহিষখোচা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক।

শাহীন জানান, মাদক চোরাচালানের বিষয়ে প্রতিবেদন করার জন্যে তথ্য সংগ্রহ করতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরের কুলাঘাট এলাকায় যান তিনি। সে সময় সোহাগ ইসলাম নামে স্থানীয় একজন তার সঙ্গে ছিলেন।

বিজিবির কুলাঘাট বিশেষ ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শাহীনকে এক বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে বিজিবির টহল দল। তাকে মারধর করা হয়নি। তিনি দৌড়ে পালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন।’

শাহীন ডেইলি স্টারকে জানান, সোহাগসহ তিনি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। পথে কুলাঘাট বেইলি সেতুর পাশে বিজিবির টহল দল তাদের থামায়। তখন তিনি ওই এলাকার মাদক চোরাচালানের বিষয়ে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে কথা বললে ক্যাম্প কমান্ডার আনোয়ার হোসেন তাকে ও সোহাগকে মারতে শুরু করেন। এরপর বিজিবির টহল দলের সদস্যরা তাদের দুই জনকেই ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং মারধর করে সোহাগকে ছেড়ে দেয়।

‘এরপর ক্যাম্পে আটকিয়ে কমান্ডার আনোয়ার হোসেনসহ তিন থেকে চার জন বিজিবি সদস্য আমাকে মারধর করতে থাকেন। তারা আমাকে লাঠি দিয়ে পেটায়। বুট দিয়ে লাথি মারে। আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাই। কিন্তু, তারা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালাগাল ও মারধর করতে থাকে’, বলেন তিনি।

শাহীন আরও জানান, পরবর্তীতে তার হাত ও কোমরে রশি বেঁধে তাকে নেওয়া হয় লালমনিরহাট সদর থানায়। শুক্রবার ভোরের দিকে এক বোতল ফেনসিডিলসহ একটি মামলা দিয়ে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরপর পুলিশ চিকিৎসার জন্যে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠায়।

শাহীনের সঙ্গে থাকা সোহাগ সাংবাদিকদের জানান, শাহীনের সঙ্গে তাকেও ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তাকে মারধর করা হয়েছিল। পরে বিজিবি সদস্যরা তাকে ছেড়ে দিলেও শাহীনকে ছাড়েননি।

‘সংবাদ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্যে শাহীন কুলাঘাটে গিয়েছিলেন। রাত হওয়ায় তিনি আমাকে সঙ্গে নিয়েছিলেন’, বলেন সোহাগ।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে বিজিবি। সেসময় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।’

‘গতকাল এক ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে আদালত শাহীনের জামিন মঞ্জুর করেন’, যোগ করেন ওসি।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. জুয়েল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাংবাদিক শাহীন চোখে, মুখে, নাকে, ঘাড়ে ও কোমরে আঘাত পেয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

The case of disgruntled DC aspirants

Restoring law and order hinges on the effectiveness of field administration where the DCs play a crucial role as the highest-ranking officials at the district level.

3h ago