১৯ এপ্রিল ১৯৭১: প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ১৮ নির্দেশনা
১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার ১৮টি নির্দেশনা জারি করে। এ নির্দেশনায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের আদেশ মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। অন্যদিকে এদিন থেকেই কলকাতাস্থ প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের হাই কমিশনে ভারতের নানা প্রান্ত থেকে ও বাঙালিদের তরফ থেকে শরণার্থীদের জন্য প্রচুর কাপড় ও অর্থ সাহায্য আসতে থাকে। একই সঙ্গে বিশ্বের বিখ্যাত সব সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে উঠে আসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের চিত্র।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ১৮ নির্দেশনা
১. কোনো বাঙালি কর্মচারী শত্রুপক্ষের সাথে সহযোগিতা করবে না। প্রতিটি কর্মচারী স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ অনুসারে কাজ করবেন। শত্রু কবলিত এলাকায় অবস্থা বিশেষে বিচার-বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করবেন।
২. সরকারি আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ও মুক্তিফৌজকে সাহায্য করবেন।
৩. সকল কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য অবিলম্বে নিকটতম মুক্তিসেনা শিবিরে যোগ দেবেন। শত্রুর সাথে সহযোগিতা করবেন না।
৪. বাংলাদেশ সরকার ছাড়া অন্য কারো বাংলাদেশ থেকে কর, খাজনা ও শুল্ক আদায়ের অধিকার নেই।
৫. যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে নৌ চলাচল সংস্থার কর্মচারীরা কোন অবস্থায় শত্রুকে সাহায্য করবেন না।
৬. নিজ নিজ এলাকায় খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদার ওপর লক্ষ্য রাখবেন।
৭. চুরি, ডাকাতি, কালোবাজারি, মজুতদারির ওপর কঠোর নজর রাখবেন।
৮. ধর্মের দোহাই দিয়ে ও অখণ্ডতার বুলি আউড়ে এক শ্রেণীর দেশদ্রোহী মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এদের চিহ্নিত করে রাখুন। এদের সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করুন। তাদের মুক্তিফৌজদের হাতে অর্পণ করুন।
৯. গ্রামে গ্রামে রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলুন এবং রক্ষীবাহিনীর স্বেচ্ছাসেবকদের মুক্তিবাহিনীর নিকটতম ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।
১০. শত্রুপক্ষের গতিবিধির খবর সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে জানাবেন।
১১. মুক্তিবাহিনীর চলাচলের জন্য চাহিবামাত্র সরকারি যানবাহন হস্তান্তর করতে হবে।
১২. বাংলাদেশ সরকার বা মুক্তিবাহিনী ছাড়া জ্বালানী বিক্রি করা চলবে না।
১৩. কেউ পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অথবা তাদের এজেন্টদের সাহায্য করবে না। যে করবে তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
১৪. গুজবে কান দেবেন না। চূড়ান্ত সাফল্য সম্পর্কে নিরাশ হবেন না।
১৫. সকল সুস্থ ও সবল ব্যক্তিকে নিজ নিজ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিকটতম মুক্তিবাহিনী শিবিরে রিপোর্ট করতে হবে।
১৬. শত্রুবাহিনীর ধরা পড়া কিংবা আত্মসমর্পণকারী সৈন্যকে মুক্তিবাহিনীর কাছে সপর্দ করতে হবে।
১৭. পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সকল প্রকার যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হতে পারে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।
১৮. তথাকথিত পাকিস্তান বেতারের মিথ্যা প্রচারণা আদৌ বিশ্বাস করবেন না।
১৯ এপ্রিল অবরুদ্ধ ঢাকা
১৯ এপ্রিল কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মালিক মোহাম্মদ কাশেম গভর্নর প্রধান সামরিক প্রশাসক জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তারা বলেন কনভেনশন মুসলিম লীগের নেতাকর্মীরা পাকিস্তানি হানাদারদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
এদিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় শান্তি বাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা ও আহবায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়। অ্যাডভোকেট নুরুল হক মজুমদারকে শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় অফিসের সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
ঢাকার বাইরের যুদ্ধ ও গণহত্যা
১৯ এপ্রিল পাবনার সাঁথিয়ার পাইকরহাটি গ্রামের ডাববাগান এলাকায় নগরবাড়ি- বগুড়া মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে গোটা উত্তরবঙ্গের চলাচলের রাস্তা রুখে দেয় মুক্তিবাহিনী। এদিকে ইপিআরের সুবেদার গাজী আলী আকবরের নেতৃত্বে ইপিআর, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, আনসার, পুলিশ ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র আক্রমণ গড়ে তোলে পাকিস্তানি হানাদারদের বিপক্ষে। প্রচণ্ড যুদ্ধে ৫০ জনের বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে হানাদারেরা নগরবাড়িতে পুনরায় ফিরে যায়। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর বেশ কজন শহীদ হয়েছিলেন।
পাকিস্তানি হানাদারেরা পিছু হটে নগরবাড়ি গিয়েই ক্ষান্ত দেয়নি। তারা আবার সেদিন রাতে অস্ত্র গোলাবারুদ ও বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে ফিরে আসে। এসময় পাকিস্তানি বহরের সামনে যুদ্ধে টিকতে না পেরে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা পিছু হটে। এমন সময় হানাদারেরা প্রতিহিংসায় উন্মত্ত হয়ে ডাববাগান সংলগ্ন বড়গ্রাম, কোড়িয়াল, রামভদ্রবাটি ও সাটিয়াকোলা গ্রামে ঢুকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরীহ মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে গণহত্যা চালায়। এই গণহত্যায় শহীদ হয়েছিল শতাধিক মানুষ।
১৯ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সিলেটের বিমানঘাঁটির দখল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। প্রথমে মুখোমুখি যুদ্ধে টিকতে না পেরে পাকিস্তানি হানাদারেরা মুক্তিবাহিনীর উপর বিমান হামলা চালায়। তখন বাধ্য হয়ে মুক্তিবাহিনী পিছু হটে।
১৯৭১ এর ১৮ ও ১৯ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ শহর দখল করে হানাদার বাহিনী, শান্তি কমিটি ও বিহারীরা শহরের দরগাহপট্টি থেকে ৭ জন নারী ও পুরুষ ধরে এনে প্রকাশ্যে রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে পিতা, পুত্র, স্বামী ও স্ত্রীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
১৯ এপ্রিল রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শহর দখল করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি হানাদারেরা।
এইদিনে ইস্পাহানী জুটমিল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে নারী, শিশু, বৃদ্ধদের ধরে এনে পৈশাচিক কায়দায় গণহত্যা চালানো হয়। এরআগে ইস্পাহানী জুট মিলসের বহু অফিসার ও শ্রমিকেরা নিখোঁজ হন। তাদের লাশটাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইস্পাহানী জুট মিলস ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় চালানো গণহত্যায় প্রায় এক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছিলেন।
এদিন আগরতলা থেকে খবর পাওয়া যায় পাকিস্তানি হানাদারেরা আখাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত রেল লাইন মেরামত করছে স্থানীয় মানুষদের বন্দুকের মুখে কাজ করতে বাধ্য করছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটির বরকলের কাপ্তাই লেকের আকাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের উপর বোমা হামলা চালাচ্ছে হানাদারেরা। অন্যদিকে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে হানাদারেরা। তারা এর মধ্যে ছত্রীসেনা নামিয়েছে।
পশ্চিম পাকিস্তানে পিপলস পার্টির নেতৃত্বে আয়োজিত সমাবেশ
এদিকে ১৯ এপ্রিল পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জে.এ ভুট্টো করাচিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, যারা পাকিস্তানকে ভাঙতে চাইছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। এই সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা এসব বিশৃঙ্খলা করছে তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিতে হবে। তিনি বলেন ইয়াহিয়া খানের পক্ষে এখন দেশবাসির দাঁড়ানো উচিত।
বিদেশি সংবাদপত্রের খবর ও প্রতিবেদন
কুষ্টিয়ার দর্শনার বিখ্যাত যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনে ১৯ এপ্রিল সংখ্যায় প্রচ্ছদ সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রখ্যাত সাংবাদিক ড্যান কগিন "কুষ্টিয়ার যুদ্ধ” শিরোনামে এই প্রচ্ছদকাহিনী রচনা করেছিলেন। এর আগে ২৫ মার্চের গণহত্যার পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিদেশি সাংবাদিকদের পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ভারত সীমান্ত দিয়ে কুষ্টিয়ায় আসেন টাইম সাময়িকীর সাংবাদিক ড্যান কগিনস। তিনি প্রত্যক্ষদর্শী ও শহীদ স্বজনদের সাক্ষাৎকার নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে ও সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে খবর নেন কিভাবে কুষ্টিয়াতে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলা হয়েছিল। যা প্রকাশিত হয়েছিল টাইম ম্যাগাজিনের ১৯ এপ্রিল সংখ্যায়।
টাইম ম্যাগাজিনের সেই প্রচ্ছদ কাহিনীতে সাংবাদিক কগিংস বলেন কিভাবে বর্বর গণহত্যার মধ্যেও রুখে দাঁড়িয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা সর্বোপরি সাধারণ মানুষ। তিনি তুলে ধরেছেন ২৫ মার্চ রাতে প্রথম আক্রমণের কথা। কিভাবে পাকিস্তানি হানাদারেরা যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে এসে কুষ্টিয়ায় প্রায় ৫০০ বাঙালি সৈনিককে নিরস্ত্র করেছে এবং জেলার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দখল নিয়েছে। অন্যদিকে এরপর কারফিউ চলাকালীন কুষ্টিয়ার অবস্থা এবং এর মধ্যেই সাধারণ মানুষের সংগঠিত হওয়ার খবর। তাদের অস্ত্র বলতে সম্বল ছিল বাঁশের লাঠি, হাতুড়ি আর নিড়ানি। ২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ রাত এই দুদিনের মধ্যে কী করে গোপনে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল রাইফেলসের সদস্যরা। ৩১ মার্চ ভোর সাড়ে চারটার সময় যে ৫০০০ সাধারণ মানুষ, কৃষক, ইপিআর, পুলিশ যে কুষ্টিয়া মুক্ত করার অভিযানে নেমেছিল এবং এই অবস্থা দেখে পাকিস্তানি হানাদারদের আক্রমণে ভীত হওয়ার ঘটনাও তিনি উল্লেখ করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আটককৃত আইয়ুব নামের এক সদস্য বলেছিলেন, আমরা ভীষণ আশ্চর্য হয়েছি। আমরা ভেবেছি বাঙালি সৈনিকদের দল সর্বোচ্চ হলে আমাদের মতো এক কোম্পানি হবে। কিন্তু আমরা জানতাম না এখানে প্রতিটি মানুষ আমাদের বিপক্ষে। এর মধ্যে ৩১ মার্চ কুষ্টিয়ার সকল সরকারি ভবন ও জেলা সদরের পতন ঘটে। অন্যদিকে পাকিস্তানি হানাদারদের জিপ আটকে দেয় সংগঠিত অজস্র সাধারণ মানুষ। তারা কী করে ১১ জন সৈনিককে মিলিটারি ট্রক থেকে নামিয়ে জবাই করে তাও উল্লেখ করা হয়েছিল। তিনি বলেন এটা ছিল মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন এর আগে এই সৈন্যরাই ৫০ জনের বেশি মানুষকে নির্মম কায়দায় গুলি করে হত্যা করেছে। আক্রমণকারী পাকিস্তানি হানাদারদের ডেল্টা কোম্পানির ১৪৭ জন সৈন্য থেকে মাত্র ১৩ জন বাঁচতে পেরেছিল জনতার ক্রোধ থেকে। নিহতদের মধ্যে একজন ছিল পাকিস্তানি নাসিম ওয়াকার। যাকে তিন মাস আগে কুষ্টিয়ায় পুলিশের সহকারী উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তার কারণে বেশ কয়েকটি জায়গায় গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিল। কুষ্টিয়ায় প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে উঠার পর কী করে উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করে হত্যা করে তার লাশ শহরের মধ্যে আধা মাইল টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তা উল্লেখ করেছেন ড্যান কগিনস। তিনি তার প্রতিবেদনে এটিকে জনরোষ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি তার প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করেন গত সপ্তাহেও কুষ্টিয়াতে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছে। কী করে বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানি সেনারা এলে বাঙালিরা তাদের বিপুল বিক্রমে প্রতিরোধ করেছে।
সুইডেনের বিখ্যাত পত্রিকা এক্সপ্রেসেন ১৯ এপ্রিল তাদের এক উপ-সম্পাদকীয়তে প্রকাশ করে, পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের দেয়া রায় মেনে নেয়ার মানসিকতা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নেই। তাই তারা সামরিক বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে এদেশের নিরীহ মানুষের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। এভাবে আর পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের পুনর্মিলন সম্ভব না। সেটা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা জানলেও তাদের একগুঁয়েমির কারণে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিরীহ মানুষ।
১৯ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রখ্যাত সাংবাদিক নিকোলাস টোমলিন লিখেছেন "ফার ফ্রম দ্য হলোকাস্ট" নামের একটি সম্পাদকীয়। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানে কী করে সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা চালানো হচ্ছে এবং মানবিক বিপর্যয়ের খবর তিনি সম্পাদকীয়তে তুলে ধরেন।
তথ্য সূত্র:
মুজিবনগর সরকার ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ/ মোহাম্মদ ফায়েকউজ্জামান
দৈনিক পাকিস্তান, ২০ এপ্রিল, ১৯৭১
অমৃতবাজার পত্রিকা ২০ এপ্রিল ১৯৭১
বাঙালির জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম/ ড. মাহফুজুর রহমান।
দ্য টেলিগ্রাফ, ১৯ এপ্রিল ১৯৭১
টাইম ম্যাগাজিন, ১৯ এপ্রিল ১৯৭১
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র তৃতীয় খণ্ড, সপ্তম খণ্ড ও ত্রয়োদশ খণ্ড।
আহমাদ ইশতিয়াক [email protected]
আরও পড়ুন:
১৮ এপ্রিল ১৯৭১: বিদেশের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন
স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সূচনা, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের শপথ
১৬ এপ্রিল ১৯৭১: প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভার শপথের অপেক্ষা, ঢাকায় কারফিউ শিথিল
১৫ এপ্রিল ১৯৭১: নিভৃতে কেটেছে বাংলা নববর্ষ, ভয়ে-আতঙ্কে ঢাকা ছাড়ে মানুষ
১৩ এপ্রিল ১৯৭১: চারঘাট গণহত্যা ও ঘটনাবহুল একটি দিন
১২ এপ্রিল ১৯৭১: বালারখাইল গণহত্যা ও ঘটনাবহুল একটি দিন
১১ এপ্রিল, ১৯৭১: দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান তাজউদ্দীন আহমদের
Comments