‘পটুয়াখালীবাসী’র একটি মানবিক উদ্যোগ

পটুয়াখালী জেলা শহরের সার্কিট হাউজ থেকে সোনালী ব্যাংক মোড় পর্যন্ত সড়কটি ইফতারের আগে সাজানো থাকে সারি সারি প্যাকেট ও পানির বোতলে। এগুলো বহন করে নিয়ে যাওয়া জন্য পাশেই রাখা থাকে একটি ছোট ব্যাগ। রোজার শুরু থেকে প্রতিদিন ইফতারের আগে এ দৃশ্য দেখা যায় সড়কটিতে।
সার্কিট হাউজ থেকে সোনালী ব্যাংক মোড় পর্যন্ত সড়কটি ইফতারের আগে সাজানো থাকে সারি সারি প্যাকেট ও পানির বোতলে। ছবি: স্টার

পটুয়াখালী জেলা শহরের সার্কিট হাউজ থেকে সোনালী ব্যাংক মোড় পর্যন্ত সড়কটি ইফতারের আগে সাজানো থাকে সারি সারি প্যাকেট ও পানির বোতলে। এগুলো বহন করে নিয়ে যাওয়া জন্য পাশেই রাখা থাকে একটি ছোট ব্যাগ। রোজার শুরু থেকে প্রতিদিন ইফতারের আগে এ দৃশ্য দেখা যায় সড়কটিতে।

রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া রোজাদাররা যে যার মতো করে একটি প্যাকেট নিয়ে চলে যান। ইতোমধ্যে এই দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মূলত পটুয়াখালীতে অসহায়, দরিদ্র কিংবা স্বল্পআয়ের দিনমজুরদের জন্য এমন ব্যতিক্রমী ইফতারের আয়োজন করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পটুয়াখালীবাসী’। এই সংগঠনের মাত্র ছয়জন সদস্য চারদিন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

ছবি: স্টার

করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশব্যপী ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন চলাকালীন স্বল্পআয়ের দিনমজুর শ্রমিকদের জন্য এই ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছেন তারা।

ইফতারের দুই ঘণ্টা বা তারও আগে তাদের রাস্তায় দেখা যায়। এসময় তারা পথচারীদের বলেন, ‘চাচা রোজা আছেন? থাকলে ওখান থেকে ইফতার নিয়ে যান।’ করোনাকালে এভাবে ইফতার পেয়ে রোজাদাররাও অনেক খুশি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিকেল চারটার দিকে ইফতারের ৫০টি প্যাকেট তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রতি প্যাকেটে মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর রাখা হয়। সঙ্গে এক বোতল বিশুদ্ধ খাবার পানি। পরে এসব ইফতার সামগ্রী সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে সার্কিট হাউজ সড়কের পাশে ফুটপাথে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়।

পায়রাকুঞ্জ এলাকার অটোবাইক চালক জাকির হোসেন জানান, ‘লকডাউনে যাত্রী নেই। পথে পুলিশ চেকপোস্টে মিথ্যা কথ বললে দু’একজন যাত্রী টানি। দিনভর যা আয় করি তা দিয়ে ইফতারি কলে বাড়ির মানুষের জন্য কিছু কেনা হবে না। রাস্তার পাশের এই ইফতার নিলাম। যারা দিচ্ছে তাদের জন্য শুভ কামনা ও দোয়া।’

রিকশা চালক আ. রহিম বলেন, ‘অন্যান্য বছরে বিভিন্ন মসজিদে ইফতার করতাম। এবছর করোনার কারণে মসজিদে মানুষ ইফতারি দেয়না, হোটেলও বন্ধ। যারা এই আয়োজন করছে তাদের জন্য দোয়া করব।’

ছবি: স্টার

‘পটুয়াখালীবাসী’র আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান রায়হান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘স্বচ্ছল পরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এ ইফতারের খরচ চালাচ্ছি। বিত্তবানরা ব্যক্তিরা এই মানবিক কাজে এগিয়ে এলে পুরো রমজান মাস এভাবে অসহায় মানুষদের মুখে ইফতার সামগ্রী তুলে দিতে পারব।’

তিনি জানান, রমজান মাসের এই আয়োজনে যে কেউ সহযোগিতা করে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারবেন। যারা সহযোগিতা করবে প্রয়োজনে তাদের নাম গোপন রাখা হবে।

উল্লেখ্য, পটুয়াখালীবাসী সংগঠনটি শহরের তরুণদের নিয়ে গঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিভিন্ন দুর্যোগে শহরের বিত্তবানদের সহযোগিতায় অসহায় হতদরিদ্র এমনকি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সহায়তার কাজ করে সংগঠনটির কর্মীরা। এই সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka requests Yunus-Modi talks during UNGA

India yet to decide on the request; sources say the meeting is unlikely as Yunus's comments in a PTI interview were not well received in New Delhi

24m ago