টিকার বিকল্প উৎস সন্ধানে বাংলাদেশ

স্টার ফাইল ছবি

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় বিকল্প উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ কমিটিকে টিকার বিকল্প উৎসগুলো খুঁজে বের করে সাত দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘টিকা পাওয়া নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আমরা টিকার বিকল্প উৎস খুঁজতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘চীনের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। কমিটি প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তারা এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার পর একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ প্রয়োজনে কমিটিতে আরও সদস্য যুক্ত করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

চলমান টিকাদান কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে কি না, জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘সময়মতো যদি টিকা না পাই, তবে টিকাদান কর্মসূচি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সিনোফার্ম বাংলাদেশকে ৬০ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি এমন সময় এসেছে, যখন দেশে প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সেরাম ইনস্টিটিউট ছয় ধাপে বাংলাদেশকে তিন কোটি টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার টিকার বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে। টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

সিনোফার্ম সম্প্রতি আরেকটি পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

২০২০ সালের শুরুর দিকে বিবিআইবিপি-কোরভি নামে করোনার একটি টিকা তৈরি করে বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস। চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশর, পাকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশ বর্তমানে এ টিকা ব্যবহার করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো এ টিকার অনুমোদন দেয়নি। তবে, ডব্লিউএইচওর উপদেষ্টা প্যানেল জানিয়েছে, সিনোফার্ম তাদের সামনে নিজেদের টিকার কার্যকারিতা সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছে।

এ ছাড়া, রাশিয়ার টিকা স্পুতনিক-ভি পাওয়ার জন্যেও দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করছে বাংলাদেশ সরকার।

সরকার সেরামের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছিল স্থানীয় এজেন্ট বেক্সিমকোর মাধ্যমে। চুক্তি অনুসারে, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত দুই দফায় মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে সরকার।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন রপ্তানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত।

এ বিষয়ে বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সেরামের কাছ থেকে এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে, শিগগিরই টিকা পাওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’

আরও পড়ুন:

বাংলাদেশকে ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দিতে চায় চীনের সিনোফার্ম

ভারত সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় বাংলাদেশে টিকা পাঠাতে পারছে না সেরাম

অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়ায় অনিশ্চয়তা: অন্য উৎস খুঁজছে সরকার

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

1h ago