‘পটুয়াখালীবাসী’

গরিবের ইফতার আয়োজক রায়হানকে মারধরের অভিযোগ জেলা আ. লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে

সার্কিট হাউজ থেকে সোনালী ব্যাংক মোড় পর্যন্ত সড়কটি ইফতারের আগে সাজানো থাকে সারি সারি প্যাকেট ও পানির বোতলে। ছবি: স্টার

পটুয়াখালী জেলা শহরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পটুয়াখালীবাসী’র ইফতার আয়োজনে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীরের বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ইফতারের আগে সার্কিট হাউজ মোড়ে এ হামলা হয় বলে ‘পটুয়াখালীবাসী’র আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান রায়হান দ্য ডেইলি স্টারের কাছে অভিযোগ করেছেন।

এই ইফতার আয়োজন নিয়ে “‘পটুয়াখালীবাসী’র একটি মানবিক উদ্যোগ” শিরোনামে গতকাল একটি সংবাদ প্রকাশ করে দ্য ডেইলি স্টার।

আজকের হামলার বিষয়ে রায়হান জানান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর ও চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে তার সহযোগীরা সেখানে গিয়ে এ হামলা চালান।

রায়হান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ সার্কিট হাউজের সামনে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসে আমাকে থাপ্পড় মারেন। আমাকে এবং ভলান্টিয়ারদের ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দেন সেখান থেকে। ইফতারের কী অবস্থা জানি না।’

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর ও চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে তার সহযোগীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে গিয়ে ‘পটুয়াখালীবাসী’র ইফতার আয়োজকদের মারধর করে সরিয়ে দেন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

তিনি বলেন, ‘প্রথমে তারা এসে বলে- তুই কী হয়ে গেছস? তোকে ফান্ড দেয় কে? তোমরা প্রোগ্রাম করো আমাদের জানাইছ?’

‘আমি ইফতারের আয়োজন করি বলে জানালে, তারা আমাকে প্রোগ্রাম করতে নিষেধ করে চলে যায়’, বলেন রায়হান।

‘এর পাঁচ মিনিট পর তারা আবার ঘুরে আসে। এসে কোনো কথা ছাড়াই মারধর শুরু করে। লাঠিসোটা ছিল না। হাত দিয়েই মারে। শুধু আমাকেই মারে’, যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে আপনি কারও কাছে অভিযোগ করেছেন? জানতে চাইলে রায়হান বলেন, ‘অভিযোগ কার কাছে করব। যাকেই ফোন দিয়ে বলি, সেই বলে দেখছি। উনি তো আবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।’

‘পটুয়াখালীবাসী’র আহ্বায়ক রায়হান জানান, আজকের ‘পটুয়াখালীবাসী’র ইফতার আয়োজনে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান মৃধার মেয়ে শিল্পী। পটুয়াখালীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানস চন্দ্র দাসও তিন দিন এ ইফতার আয়োজনে টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। আগামীকাল ৫০ জনের ইফতার আয়োজন করার কথা ছিল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার দেওয়া টাকায়।

মাহমুদুল হাসান রায়হান পটুয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স করেছেন। ছোটখাটো একটি চাকরি করেন এলাকায়। পাশাপাশি চালান এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।

যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রায়হানের সঙ্গে সাবেক এক শিবির কর্মীর সখ্যতা আছে। সার্কিট হাউজের সামনে ইফতার আয়োজনে জহিরুল নামের ওই শিবিরকর্মীর সংশ্লিষ্টতার খবর পেয়ে সেখানে যান তিনি।

রায়হানের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তার ওপর হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। রায়হানকে বলেছি- খারাপ ছেলেদের যেন প্রশ্রয় না দেয়।’

পটুয়াখালীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানস চন্দ্র দাস ‘পটুয়াখালীবাসী’র উদ্যোগে তার সহযোগিতার বিষয়টি স্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি তিন দিন তাদের পাশে ছিলাম। উদ্যোগটা ভালো লেগেছে বলে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’

ইফতার আয়োজনের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খবর নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন: ‘পটুয়াখালীবাসী’র একটি মানবিক উদ্যোগ

Comments

The Daily Star  | English
problems in filing complaints in police stations

No scope to verify authenticity when cases are filed: IGP

Instructions have already been issued to ensure that no one is arrested in a harassing manner, he says

1h ago