শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের স্বপ্নের মতো দিন

Najmul Hossain Shanto
ছবি: শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট

ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক কন্ডিশন, প্রতিপক্ষের সাদামাটা বোলিং আক্রমণ মিলিয়ে বাংলাদেশের সামনে ছিল বড় সুযোগের মঞ্চ। তবে এমন কত সুযোগই তো হেলায় হারানোর ইতিহাস আছে। এবার অবশ্য তামিম ইকবালের আগ্রাসী ৯০, নাজমুল হোসেন শান্তর প্রথম সেঞ্চুরি আর মুমিনুল হকের ফিফটিতে তা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটি বলা যায় একদম স্বপ্নের মতন। 

বুধবার পালেকেল্লেতে আগে ব্যাটিং বেছে নিয়ে দিনশেষে ২ উইকেটে ৩০২ রান করেছে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে  ১২৬ রান করে অপরাজিত আছেন শান্ত, মুমিনুল ৬৪ রান ব্যাট করছেন। তামিম পাগলাটে শটে সেঞ্চুরি হাতছাড়া না করলে হয়ত ১ উইকেট হারিয়েই দিন পার করে ফেলত মুমিনুল হকের দল।

বাংলাদেশের স্পিন শক্তি বিবেচনায় পালেকেল্লেতে উইকেটে ঘাস রেখেছিল শ্রীলঙ্কা। দুই দলের একাদশেই তাই তিনজন করে পেসার। তবে ঘাসের ছোঁয়া থাকা এসব উইকেট যে কথা বলে ব্যাটসম্যানদের হয়েও। একমাত্র সাইফ হাসান ছাড়া বাকি সব ব্যাটসম্যানই দিনভর প্রমাণ করে গেছেন তা।

দিনের একদম দ্বিতীয় ওভারেই কাটা পড়েন সাইফ। বিশ্ব ফার্নেন্দোর ভেতরে ঢুকতে থাকা বল আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে পায়ে নিয়ে ফেলেছিলেন। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় শ্রীলঙ্কা।

এরপরই দ্বিতীয় উইকেটে শুরু তামিম-শান্তর ঝলক। তিন নম্বরে নেমে বারবার ব্যর্থতায় সমালোচনায় থাকা শান্ত ছিলেন শক্ত মাটির খুঁজে। শুরুতে নেমে তাই তিনি বেশ সতর্ক। ওদিকে তামিম ছিলেন ইতিবাচক মেজাজে। ক্রিকেটীয় সব ঝুঁকিহীন শটে অনায়াসে রান বাড়াচ্ছিলেন তিনি।

প্রথম ঘণ্টার ৫৭ রানের ৪৩ রানই আসে তার ব্যাটে। লাঞ্চের আগেই ফিফটি পেরিয়ে যান তামিম, আভাস দেন সেঞ্চুরির।

এই দুজনকে আলাদা করার মতো কোন পরিস্থিতিই তৈরি করতে পারছিলেন না লঙ্কান বোলাররা। ধারাবাহিকভাবে ভাল লেন্থে বল ফেলতে ভুগতে দেখা যায় তাদের। যার ফায়দা পুরোপুরি উঠিয়ে নেন তামিম-শান্ত।   লাঞ্চ থেকে ফিরেও তরতর করে এগুতে থাকে তামিমের ব্যাটে। ওয়ানডে মেজাজের ইনিংসটা তিন অঙ্কে পূর্ণতা পাওয়া যখন প্রায় নিশ্চিত তখনই গড়বড়।

বিশ্বের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল থার্ড ম্যান দিয়ে ঠেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ১০১  বলে ৯০ করা তামিম। এতে ভাঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে তার ১৪৪ রানের জুটি। প্রথম দুই সেশনে এই দুই উইকেটই হারায় বাংলাদেশ।

উইকেট নিয়েও ম্যাচে ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরা। তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে সতর্ক পথে থিতু হন অধিনায়ক মুমিনুল।  সঙ্গীর বিদায়ে দায়িত্ববোধ বেড়ে যায় শান্ত। ফিফটি তুলে নেওয়ার পর ৭০ পর্যন্ত বেশ ভালো গতিতে এগিয়ে যান শান্ত। এরপরই কিছুটা নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অতি সতর্ক পথে হাঁটতে থাকেন।

১৯৫ বলে পৌঁছান নব্বুইর ঘরে। স্নায়ুচাপ হয়ত কিছুটা ভর করেছিল। পরের ১০ রান আনতে লেগেছে আরও ৪০ বল। ২৩৫ বলে চার মেরে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। খারাপ সময় ঝেড়ে ফেলে যেন ব্যাট উঁচু করে স্বস্তি তার। সেঞ্চুরি করেও আত্মতুষ্টির ছাপ দেখা যায়নি তার মাঝে।

মুমিনুলকে নিয়ে পার করে দেন দিনের বাকি সময়। শেষ সেশনে আর কোন উইকেটই হারায়নি বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এসে গেছে ১৫০ রান। শান্তর সঙ্গে তাল মিলিয়ে লঙ্কানদের হতাশায় পুড়িয়ে মুমিনুলও দিচ্ছেন দেশের বাইরে প্রথম সেঞ্চুরির আভাস।

শেষ সেশনে

সংক্ষিপ্ত স্কোর

(প্রথম দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৯০ ওভারে ৩০২/২  (তামিম ৯০, সাইফ ০, শান্ত ব্যাটিং ১২৬* , মুমিনুল ব্যাটিং ৬৪* ;  লাকমাল ০/৫৫, বিশ্ব ২/৬১, লাহিরু ০/৬৩, ম্যাথিউস ০/৮, ধনঞ্জয়া ০/৭১, হাসারাঙ্গা ০/৩৪ )

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago