‘ঘুম ভেঙে যাওয়ায়’ ছোট্ট ভাতিজার শরীরে ফুটন্ত ভাত ঢেলে দিলেন চাচা

ছয় বছরের শিশুটি এখন আর কাঁদতেও পারছে না। কান্নার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে। কণ্ঠও বসে গেছে। এখন গলা দিয়ে শুধু হালকা আওয়াজ বের হয় ব্যথার।
তার মাথার পেছনে ঘাড়ের ওপর-নিচ ও কানসহ শরীরের বিভিন্নস্থান ঝলসে গিয়ে দগদগে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
গত সোমবার সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভাংবাড়িয়া গ্রামে।
শিশুটির নাম রাব্বি হোসেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমন কথা শুনে বিলাপ করছেন তার মা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একটি তুচ্ছ অভিযোগ এনে শিশুটির ওপর ফুটন্ত গরম ভাত ঢেলে দেন তারই আপন বড় চাচা আব্দুর রশীদ।
অভিযোগ, মালয়েশিয়া প্রবাসী ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে অবুঝ শিশুটিকে এমন অত্যাচার করেছেন তিনি।
শিশুর মা রোমানা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত সোমবার সকালে রাব্বি বাড়ির মধ্যে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। আমি ভাত রান্না করছিলাম। সেসময় পাশের একটি কক্ষে তার বড় চাচা ঘুমাচ্ছিলেন।’
‘খেলতে থাকা শিশুদের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় রশিদের। রেগে গিয়ে চুলার ওপর থেকে ফুটন্ত ভাতের হাড়ি নিয়ে রাব্বির মাথায় ঢেলে দেন আব্দুর রশীদ।’
‘এতে রাব্বির মাথা, ঘাড় ও কানসহ শরীরের বিভিন্নস্থান ঝলসে যায়’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার পর রাব্বির শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে গতকাল রাতে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে মনে হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।’
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। একজন অফিসার পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছি। এখনো ওই বিষয়ে অভিযোগ করেনি শিশুটির পরিবার। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘অভিযুক্ত রশিদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি’ উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, ‘তিনি পালিয়ে যেতে পারেন।’
Comments