‘বিডিআই আজীবন সম্মাননা’ পাচ্ছেন ড. হামিদা হোসেন

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের (বিডিআই) ‘আজীবন সম্মাননা-২০২১’ পাচ্ছেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন।
Hamida Hossain.jpg
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা দ্য বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের (বিডিআই) ‘আজীবন সম্মাননা-২০২১’ পাচ্ছেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন।

কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার গবেষণা বা নীতিগত পরামর্শ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে ও বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সাল থেকে ‘বিডিআই আজীবন সম্মাননা’ দেওয়া হচ্ছে।

এ বছর ড. হামিদা হোসেনকে এই সম্মাননা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি-আমেরিকান গবেষক-পেশাজীবীদের সংগঠন বিডিআই।

ড. হামিদা হোসেন ১৫ বছর বয়সে নিউইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড উই ওয়ান্ট’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় একটি প্রবন্ধ লিখে পুরষ্কার জেতেন। পুরষ্কার হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তিন মাসের সফরে গিয়েছিলেন। ড. হোসেন সারাজীবন সমাজের প্রান্তিক মানুষের গুরুত্ব আছে এমন এক সমাজব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

ড. হামিদা হোসেন ১৯৩৬ সালে সিন্ধুর হায়দ্রাবাদে জন্ম নেন। তিনি করাচি ও হায়দরাবাদের মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা আবদুল্লাহ আখন্দ ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বিচারক ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত থেকে পাকিস্তানে আসা শরণার্থীদের জন্য তার দাদি একটি ক্লিনিক ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ড. হামিদা হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস’র ওয়েলসলি কলেজে সাহিত্য ও ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক পড়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবনে তিনি প্রকাশনা ও সম্পাদনার পাশাপাশি কারুশিল্পের বিকাশ ও নারী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি করাচিতে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের সম্পাদক হিসেবে তার পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন।

ড. হামিদা হোসেন ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ইংরেজি ভাষার রাজনৈতিক মাসিক পত্রিকা ‘ফোরাম’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কাজ করেন। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বৈষম্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ‘ফোরাম’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি ঢাকায় ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরে ড. হামিদা হোসেন যুদ্ধের সময় যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন।

স্থানীয় শিল্প কারুশিল্পের বিকাশ ও বিপণনের জন্য তার প্রচেষ্টার ফলে ১৯৭৪ সালের নভেম্বরে কারিকা-বাংলাদেশ হস্তশিল্প সমবায় ফেডারেশন লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। পৃথিবীর মানচিত্রের বুকে নতুন জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের প্রাচীন সংস্কৃতি ও লোক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ সমবায় প্রতিষ্ঠানটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিডিআইয়ের পরবর্তী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ড. হামিদা হোসেনকে ‘আজীবন সম্মাননা-২০২১’ দেওয়া হবে। এ ছাড়া, পছন্দের একটি বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ড. হামিদা হোসেনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

Comments

The Daily Star  | English
metro rail operations restart after suspension

Metro rail to run on Fridays

The metro rail authority also expects that trains will stop at Kazipara station from Friday as it is being prepared to resume operations

1h ago