ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়ে পালাতে গিয়ে গাড়িচাপায় মোটর শ্রমিক নিহত

dead body
প্রতীকী ছবি। স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলায় প্রাইভেটকারের চাপায় আব্দুল লতিফ (৫৫) নামে এক পরিবহন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের রাশ টানতে চলমান লকডাউনের বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত দায়িত্ব পালনকালে ভয় পেয়ে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন লতিফ।

তারা আরও জানিয়েছেন, লতিফ কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে রাজশাহী আসছিলেন। বানেশ্বর বাজারের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চা খেতে দোকানে গিয়েছিলেন লতিফ। সে সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লাঠি হাতে ধাওয়া দিতে শুরু করে। বাঁশি বাজিয়ে দোকান বন্ধ করতে বলছিল। চায়ের দোকানের দিকে আসার আগেই দৌড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে লতিফ প্রাইভেটকারের নিচে চাপা পড়েন।

আজ শনিবার সকালে কাভার্ড ভ্যানের চালক মো. ইউসুফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গতকাল দুর্ঘটনার সময় আমি গাড়িতেই ছিলাম। বানেশ্বর বাজারের পাশে আমরা ইফতার করেছিলাম। লতিফ চা খেতে গিয়েছিলেন। গ্রামের মানুষ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের পুলিশ-টিএনও বাঁশি দিলে ভয় পেয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রাইভেটকারের নিচে চাপা পড়েন। পুলিশ দূরেই ছিল, দেখা যাচ্ছিল।’

একই কোম্পানির আরেক গাড়িচালক মো. নিজাম বলেন, ‘আমি দেখিনি। দুর্ঘটনার সময় ওয়াশরুমে ছিলাম। বের হয়ে দেখি অনেক মানুষের জটলা। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি লতিফকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখে শুনলাম, পুলিশ বাঁশি বাজিয়ে লাঠি হাতে এগিয়ে আসছিল। ভয় পেয়ে দৌড়াতে গিয়ে গাড়িচাপায় আহত হয়েছেন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান।’

পবা হাইওয়ে পুলিশের শিবপুর ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, ‘পুঠিয়া উপজেলায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে প্রাইভেটকারের চাপায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আব্দুল লতিফ (৫৫) নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায়। করোনা মহামারি শুরু হলে লতিফ ইতালি থেকে দেশে আসেন এবং দুই সপ্তাহ আগে কাভার্ড ভ্যান চালকের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। দুর্ঘটনার পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি দুর্ঘটনায় আহত হন।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘প্রাইভেটকারটি মালিক রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাবেক মেয়র এবং জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ সকালে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বানেশ্বর বাজারে ছিলাম। আমি গাড়ি থেকেও নামিনি। আমাদের কেউ ধাওয়া দেয়নি। মাইকিং করে আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি বাড়ি চলে যেতে। আধা কিলোমিটার দূরে মাইকিং করায় কেউ যদি ভয় পায় আমাদের কী করার থাকতে পারে।’

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago