দ্রুত নিষেধাজ্ঞা তোলার ব্যাপারে সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

ছবি: রাশেদ সুমন

চলাচলে বিধি-নিষেধ আগামী বুধবার থেকে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। তবে এত দ্রুত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে তা বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আবারও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, মানুষের জীবিকা নিয়ে ভাবা জরুরি হলেও সবকিছু খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, ‘অন্তত ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরকে কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা উচিত। যেহেতু (সব ধরনের চলাচলের ওপর) কঠোর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা কঠিন, সেহেতু ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে পারে এমন কিছু উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।’

গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিৎ ভারতের পরিস্থিতিকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া।’

গত সাত দিন ধরে দেশে করোনা শনাক্তের হার কমছে। গতকাল পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের হার ২৩ শতাংশ।

গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ঘোষণা দিয়েছে, আজ হতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শপিং মল খোলা থাকবে।

কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। পরিস্থিতি আবারও আগের মতো খারাপ হয়ে যেতে পারে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন, আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।

তিনি বলেন, ‘চলমান লকডাউনে অনেক মানুষ বিভিন্ন স্থানে আটকে আছে। লকডাউনের পর গণপরিহন খুলে দেওয়ার কথা সরকার গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের আরও বলেন, ‘গণপরিহনগুলোতে অবশ্যই ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখতে হবে। এ অবস্থায় তারা কেমন ভাড়া রাখবে, তা পরে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে আমাদের।’

গণপরিবহন খুলে দেওয়া হলে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ট্রেন চালু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে (বিআর)।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘গণপরিবহন চালু হলে আমরাও ট্রেন চালু করব। আমাদের প্রস্তুতি আছে।’

সরকার গণপরিহন বন্ধ ও চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর গত ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ বিষয়ক জনস্বাস্থ্য পরামর্শক কমিটি মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয়।

বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বলেন, দোকানপাট ও শপিং মল এলাকা ভেদে ভিন্ন সময় খোলা রাখার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এছাড়া, ঢাকা ও চট্টগ্রামে যানবাহন ঢোকা ও বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা এবং অফিসগুলোতে ৫০ শতাংশ বা তার কম কর্মী নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন তারা।

অধ্যাপক এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে দেশের অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ আরও কয়েকদিন বিচ্ছিন্ন থাকুক। যাদের এ শহরগুলোতে ঢোকা বা এখান থেকে বের হওয়া জরুরি, তাদেরকে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাস সংগ্রহ করার একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে।’

পাশাপাশি, সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রাখা এবং ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দেয় কমিটি।

বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা মুশফিক হোসেন বলেন, ‘এখনই বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না।’

গত সপ্তাহে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি পরিস্থিতি বুঝে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরামর্শ দেয় সরকারকে।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

3h ago