১ ওভারে ৩৭ রান, বোলিংয়ে ৩ উইকেট, জাদেজাময় ম্যাচে জিতল চেন্নাই
ভালো শুরুর পরও মাঝারি রানের আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগেছিল চেন্নাই সুপার কিংসের। তবে রবীন্দ্র জাদেজার ভাবনায় ছিল অন্য কিছু। আগের তিন ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করা হার্শাল প্যাটেলের ওপর তোপ দাগলেন তিনি। ৫ ছক্কা আর ১ চারে ইনিংসের শেষ ওভার থেকে এলো ৩৭ রান! ফুলেফেঁপে উঠল চেন্নাইয়ের সংগ্রহ। পরে ৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ধসিয়ে দিয়ে জয়ের নায়ক এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।
রবিবার আইপিএলে জাদেজাময় ম্যাচে ৬৯ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯১ রান তোলে তারা। জবাবে পুরো ওভার খেলে ৯ উইকেটে ১২২ রান তোলে বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরু। আসরে পাঁচ ম্যাচ খেলে এটি তাদের প্রথম হার। অন্যদিকে, সমান ম্যাচে চেন্নাইয়ের এটি চতুর্থ জয়। তারা বেঙ্গালুরুকে টপকে উঠে গেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
মাত্র ২৮ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন জাদেজা। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ৫ ছক্কা। নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ ২০তম ওভার শুরুর আগে তার সংগ্রহ ছিল ২১ বলে ২৬ রান। পেসার হার্শালের প্রথম চার ডেলিভারিতে টানা ছক্কা হাঁকান তিনি। তৃতীয় ডেলিভারিটি ছিল আবার নো। চতুর্থ বলে মোহাম্মদ সিরাজ ক্যাচ ফেলায় ডাবল নেন জাদেজা। পঞ্চম বলে ফের ছক্কা মারেন তিনি। শেষ বলে চার হওয়ায় আইপিএলের সবচেয়ে খরুচে ওভারের তালিকায় ভাগ বসান হার্শাল। ২০১১ আসরে ক্রিস গেইলও ৩৭ রান নিয়েছিলেন প্রশান্ত পরমেশ্বরণের ওভারে।
চার ওভারে মাত্র ১৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন জাদেজা। তার ঘূর্ণি জাদু শুরুর আগে ওভারপ্রতি প্রয়োজনীয় রানের গড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছিল বেঙ্গালুরু। নিজের প্রথম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরকে বিদায় করেন তিনি। তার পরের দুই ওভারে বোল্ড হন দুই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। মাঝে সরাসরি থ্রোতে ড্যান ক্রিস্টিয়ানকেও সাজঘরে পাঠান জাদেজা। তাতে চেন্নাইয়ের জয় হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার।
অথচ আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান দেবদূত পাডিক্কালের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। ৩.১ ওভারে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে অধিনায়ক কোহলির বিদায়ে। ৭ বলে ৮ রান করে স্যাম কারানের বলে পরাস্ত হন তিনি। পাড্ডিকালকে ফেরান শার্দুল ঠাকুর। ১৫ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে ৩৪ রান আসে এই বাঁহাতির ব্যাট থেকে। পাওয়ার প্লে শেষে, তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৬৫ রান।
পরের গল্পটা চেন্নাইয়ের স্পিনারদের। উইকেট থেকে পাওয়া সুবিধা দারুণভাবে কাজে লাগান জাদেজা ও ইমরান তাহির। পাড্ডিকাল বাদে বেঙ্গালুরুর মাত্র দুজন ব্যাটার পান দুই অঙ্কের দেখা। ম্যাক্সওয়েল ১৫ বলে করেন ২২ রান। সিরাজ অপরাজিত থাকেন ১৪ বলে ১২ রানে। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে তাহির ২ উইকেট নেন ১৬ রানে।
এর আগে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৪ রান যোগ করে চেন্নাইকে বড় সংগ্রহের ভিত দেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ও ফ্যাফ ডু প্লেসি। দশম ওভারে তাদেরকে আলাদা করেন যুজবেন্দ্র চাহাল। গায়কোয়াড়ের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ৩৩ রান। চতুর্দশ ওভারে জোড়া শিকার ধরেন হার্শাল। থিতু হয়ে ১৮ বলে ২৪ করে বিদায় নেন সুরেশ রায়না। পরের বলেই তাকে অনুসরণ করেন হাফসেঞ্চুরিয়ান ডু প্লেসি। তিনি করেন ৪১ বলে ৫০ রান। আম্বাতি রাইডুকেও বিপজ্জনক হওয়ার আগে মাঠছাড়া করেন হার্শাল। ৭ বলে ১৪ করেন তিনি।
সেই হার্শালই পরে পরিণত হন খলনায়কে। চলতি আসরের সেরা এই বোলার (৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট) খান জাদেজার বেদম মার। প্রথম তিন ওভারে মাত্র ১৪ রান দেওয়ার পরও তার বোলিং স্পেল দাঁড়ায় ৪-০-৫১-৩।
Comments