মে’র শেষে দ্বিগুণ হতে পারে দৈনিক সংক্রমণ

চলমান বিধি-নিষেধ শিথিল করলে বা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৭০ বছর বয়সী মোহাম্মদ ইউনূসকে চার দিন আগে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল সেখানেই মারা যান তিনি। তার মরদেহ নিয়ে মেয়ে এবং নাতি-নাতনিরা একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ছবি: আনিসুর রহমান

চলমান বিধি-নিষেধ শিথিল করলে বা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এপিডেমিওলজিকাল প্রজেকশন মডেলিংয়ের ওপর ভিত্তি করে এমন পূর্বাভাস দিয়েছেন তারা।

পূর্বাভাসে বলা হয়, বর্তমানে যে হারে সংক্রমণ কমছে এর ধারা আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে ঈদে মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণ বাড়তে পারে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহে যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

গবেষকরা বলেন, একই ভাবে এই সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৩০৬ জন এবং মারা গেছেন ৯৭ জন।

কোভিড-১৯ ইন্টারন্যাশনাল মডেলিং কনসোর্টিয়ামের সদস্য শাফিউন শিমুল গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার কমছে। চলাচলে বিধি-নিষেধ থাকায় মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সংক্রমণ এই হার একই রকম থাকবে। তবে ঈদে চলাচল বাড়বে, ফলে সংক্রমণের হার আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।’

এই কনসোর্টিয়াম গঠিত হয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ ৪০টি দেশের সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ক মডেলারস ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে।

এই দলের গবেষকরা নিজ দেশের বিদ্যমান অবস্থার ওপর ভিত্তি করে মহামারি সংক্রান্ত বিদ্যা ও অর্থনৈতিক মডেল অনুসরণ করে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে কাজ করেন। যা ওই দেশের নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে।

কনসোর্টিয়ামের বিশ্লেষণ অনুসারে, গত বছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অথবা এ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় মারা গেছেন।

এই দলের গবেষকরা বলছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ এমন মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছাবে।

কনসোর্টিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইকোনোমিকসের সহযোগী অধ্যাপক শাফিউন শিমুল বলেন, ‘এ ধরনের অনেক মৃত্যুর ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য কোনো উপাত্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই এ ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন দেশের গবেষণাপত্র ও অভিজ্ঞতার উপাত্ত ব্যাবহার করেছি। এ ছাড়া মহামারির কারণে চিকিৎসা না পেয়ে অন্যান্য রোগে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রেখেছি।’

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্চের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রত্যক্ষ করছে।

১৬ এপ্রিল থেকে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করে। গতকাল এই হার ছিল ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ১৫০ জন মারা গেছেন। মৃত্যুহার দাঁড়িয়েছে এক দশমিক ৪৯ শতাংশে।

Comments

The Daily Star  | English

Metro rail services on the Agargaon-Motijheel route suspended

However, train movement from Uttara North to Agargaon section is normal

33m ago