জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ

প্রতীকী ছবি

স্ত্রী-সন্তান হত্যা মামলার আসামি শেখ জাহিদকে একটা রায়ের জন্য মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে বছরের পর বছর ধরে।

খুলনা সদরের বাঘমারা মতলবের মোড়ের এই বাসিন্দার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয় ২০০০ সালের ২৫ জুন। এসময় তিনি ছিলেন খুলনা জেলের কনডেম সেলে। সেখান থেকেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

২০০৪ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পরের বছর খুলনা জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপিল বিভাগে পিটিশন দাখিল করেন জাহিদ।

গত বছরের ১ মার্চ জেল কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসকে (এসসিএলএও) জাহিদের পিটিশনের বিষয়ে জানাতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়। এর আগ পর্যন্ত বছরের পর বছর ধরে এ পিটিশন ঝুলেই ছিল।

চিঠি পাওয়ার পর এসসিএলএও’র চেয়ারম্যান বিচারপতি এনায়েতুর রহিম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পিটিশনের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেন, যেন আপিল বিভাগে শুনানির মাধ্যমে যতো দ্রুত সম্ভব এর রায় দেওয়া সম্ভব হয়। 

পরে আপিল বিভাগ একটা ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করেন এবং গত বছরের ২৫ আগস্ট জাহিদকে বেকসুর খালাস দেন। ৪৯ বছর বয়সী জাহিদ পরদিন জেল থেকে ছাড়া পান বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন এসসিএলএও’র সমন্বয়ক রিপন পাল স্কু।

তিনি জানান, দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে বের হওয়ার পর নিজের খরচ চালানোর মতো কোনো কাজই পাচ্ছিলেন না জাহিদ। এসসিএলএও তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করছে। 

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করার পর থেকে জাহিদের মতো আরও অনেক দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস। চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ অব্যাহত রেখেছে এসসিএলএও।  

দেশে আজ বুধবার জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত হচ্ছে। 

এসসিএলএও’র সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুসারে, গত মার্চ পর্যন্ত তারা বিনামূল্যে ১৭ হাজার ৯৫২ জনকে আইনি পরামর্শ ও মতামত দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের প্যানেল আইনজীবীদের মাধ্যমে ৭৯৯টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। 

দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অনেক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা নিজেদের আইনগত অধিকার প্রমাণ ও রক্ষা করার মতো আইনগত সহায়তা পায় না। 

দেশের এই নিম্নআয়ের ও দুর্বল নাগরিকদের আইনগত সহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্যই ২০০০ সালে আইনগত সহায়তা আইন প্রণয়ন করা হয়। একই বছর এই আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা।

এই সংস্থার অধীনে এখন আইনগত সহায়তা প্রদান কমিটিগুলো দেশের সব জেলায় কাজ করছে। এর মাধ্যমে সরকার এখন পর্যন্ত ছয় লাখ সাত হাজার ৮৮০ জন দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus inaugurates month-long programme on July uprising

The chief adviser said the annual observance aimed to prevent the reemergence of authoritarian rule in the country

32m ago