বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দীর্ঘ মেয়াদি নগদ অর্থ সহায়তায় বরাদ্দ প্রয়োজন: সিপিডি

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দীর্ঘ মেয়াদি আর্থিক নগদ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের ওপর করের হার কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্ট্রাল ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
CPD
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দীর্ঘ মেয়াদি আর্থিক নগদ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের ওপর করের হার কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্ট্রাল ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে করোনা মোকাবিলায় সরকারকে স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে প্রাধান্য দিয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) জিডিপি’র দুই থেকে তিন শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে এবং চার থেকে ছয় শতাংশ সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ করে সংস্থাটি।

সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে দেশের দরিদ্রের হার যেমন বড়েছে, তেমন সরকারেরও বিভিন্ন উৎস থেকে কর আদায় আশানুরূপ হয়নি। ফলে সরকারকে উচ্চবিত্তদের কাছ থেকে বেশি পরিমাণে কর আদায় করে দরিদ্রদের মধ্যের নগদ সহায়তা হিসেবে দিতে হবে। এ সহায়তা এককালীন না হয়ে বছরে অন্তত দুই থেকে চারবার করে দীর্ঘ সময় ধরে দিতে হবে। কারণ করেনার সার্বিক পরিস্থিতি থেকে মনে হচ্ছে তা আরও কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।’

তিনি বলেন, আগমী বাজেটে বড় বড় প্রকল্প না নিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায় এমন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে জিডিপি বাড়ানোর চেয়ে বেশি প্রয়োজন সম্পদের সুষম বণ্টন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য সরকার সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আগের অবস্থানে অর্থাৎ ৩০ শতাংশে নিয়ে যেতে পারে।’

তবে সর্বনিম্ন কার হার ও করভুক্ত আয়ের সীমা গত বছরের অবস্থানে রাখার পক্ষেই মত দেন তিনি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা যৌক্তিক হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার কারণে সরকার হয়তো এককালীন কিছু টাকা আদায় করতে পেরেছে। কিন্তু তা দীর্ঘ মেয়াদি সুফল বয়ে আনতে পারবে না। কারণ এতে সময় মতো আয়কর প্রদান না কারার পাশাপাশি দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হবে।’

সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘সরকার করোনায় সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জন্য যে প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছিল তা এখনো সব জায়গায় বণ্টন করা হয়নি। একইভাবে ডাক্তার ও নার্সের সংখ্যাও আগের অবস্থানেই রয়ে গেছে। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাজারে এ খাতে বরাদ্দ আগের বছরের চেয়ে বাড়ানো প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে সিডিপির সুপারিশের মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য থেকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্কসহ নানা ধরনের কর আদায় করে আসছে। এসব খাতে করের সীমা কমিয়ে আনা প্রয়োজন। কারণ দেশের সিংহভাগ মানুষের আয়ের বড় একটি অংশ চলে যায় এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে কেনার পেছনে।’

তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট সেবা এখন প্রায় সব শ্রেণির মানুষের কাছে অতি প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা, ব্যবসা ও অন্যান্য কাজে এখন ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। এ খাতে ২১ শতাংশ কর থাকা যৌক্তিক নয়। আগামী বাজেটে এই সেবা থেকে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কারণ ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ এখনো দেশের বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে এই খাতে আরও বেশি বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার্থীদের কীভাবে আরও বেশি এগিয়ে নেওয়া যায় তা খোঁজে বের করতে হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
Metro now connects Uttara with Motijheel

Uttara-Motijheel Metro: 8am-8pm service not before April

Commuters may have to wait until July for service until midnight on the entire Uttara-Motijheel section, hints Metro rail authorities

2h ago