কয়রায় লোকালয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি, বাঁধ ভাঙার শঙ্কায় এলাকাবাসী
পূর্ণিমার প্রভাবে গত তিন দিনে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় খুলনার কয়রার বিভিন্ন জায়গায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া থেকে হোগলা পর্যন্ত কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান দিয়ে লোনা পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধের অধিকাংশ জায়গা দুর্বল। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষত শুকিয়ে উঠার আগেই পুনরায় যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে ডুবে যেতে পারে ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা, মৎস্য ঘের, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ নিয়ে এলাকার হাজারো মানুষ আতঙ্কে আছেন।
কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কয়রার দশালিয়া থেকে হোগলা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি রাস্তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে জোয়ারে পানিতে বাঁধের বিভিন্নস্থা ন দিয়ে চুইয়ে ও ছোট-বড় ছিদ্র দিয়ে নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। আজও অনেক জায়গায় পানি প্রবেশ করছে।
‘স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন জায়গায় মাটি দিয়ে পানি ঢোকার পথ বন্ধ করছে। কিন্তু আরো পানি বৃদ্ধি পেলে এই বাঁধ টিকিয়ে রাখা যাবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে,’ বলেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
স্থানীয় মুকুল সরদার বলেন, ‘গত বছর আম্পানে এখান দিয়ে পানি ঢুকে ছিল। আইলার সময়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। কখনো কখনো দায়সারা কাজ হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কষ্টের কথা কখনোই বিবেচনায় নেয়নি। এখন প্রবল জোয়ারে আবারো বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, গত বছর আম্পানে বাঁধ ভেঙে যে ক্ষতি হয়েছিল এখনও সে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউল আবেদীন বলেন, পানি ঢোকার সংবাদ শুনে প্রথম থেকেই আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। পূর্ণিমার প্রভাবে জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকালয়ে পানি যাচ্ছে। তবে তা খুবই অল্প। আশা করি কোন সমস্যা হবে না।
গত বছর ২০ মে আম্পানের আঘাতে জোয়ারের পানি বেড়ে দশালিয়ার বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়। দীর্ঘ ১১ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি।
Comments