চরম হতাশার প্রথম দিন
কেবল প্রথম ঘণ্টা বলা যায় বাংলাদেশের, কিংবা প্রথম সেশনে উইকেট না এলেও ভালোই ঝাঁজ ছিল বোলারদের। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের তখন চাপে ফেলা গিয়েছিল। ক্যাচ না ফসকালে পরে সেই চাপ থেকে উইকেটও আসত। কিন্তু এরপর বাকি দিনে কেবল হতাশার গল্প। উদ্বোধনী জুটিতেই এলো দুশোর বেশি রান, দুই ওপেনারই করলেন সেঞ্চুরি। সারাদিনে উইকেট পড়ল কেবল একটি।
বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলেতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন চরম হতাশায় কাটল বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে ১ উইকেটেই ২৯১ রান করে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ১১৮ রান করে ফেরার পর লাহিরু থিরিমান্নে তুলে নেন সেঞ্চুরি, তিনি অপরাজিত আছে ১৩১ রানে। সঙ্গী ওসাদা ফার্নেন্দোর রান ৪০ ।
উদ্বোধনী জুটিতে ২০৯ রান আনার পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেও এসে গেছে ৮২ রান। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেট পান অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম। উইকেট না পেলেও ভালো বল করেছেন তাসকিন আহমেদ।
দিনের তিন সেশনে রানের গতি উঠানামা করেছে। প্রথম সেশনে ২৭ ওভারে ৬৬ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তারা ছিল সতর্ক অবস্থায়। দুই ওপেনারই শুরুর কঠিন সময়টা দাঁত কামড়ে পার করে দেওয়ার পণ নিয়েছিলেন।
ফলও মিলেছে। দ্বিতীয় সেশনে ওভার প্রতি প্রায় চারের কাছাকাছি রান এসেছে। ৩২ ওভারে স্বাগতিক ওপেনাররা তুলেন বিনা উইকেটে ১২২ রান। শেষ সেশনেই পড়েছে দিনের একমাত্র উইকেট। ওই সেশনে প্রথম ঘণ্টায় মন্থর হয়ে যায় রানের গতি। তবে ৩২ ওভারে পরে ঠিকই আরও ১০৩ রান যোগ করে নেয় স্বাগতিকরা।
চা-বিরতির পর ফিরে দ্রুত রান বাড়ানোর তালে ছিলেন করুনারত্নে। আগের সেশনে সেঞ্চুরি করা লঙ্কান অধিনায়ক খেলছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। দলের রানও পেরিয়ে গিয়েছিল বিনা উইকেটে দুশো। হতাশা বাড়তে থাকা অবস্থায় তাকে ফেরান অভিষিক্ত শরিফুল।
তার বলে খোঁচে মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন করুনারত্নে। লিটন দাস দারুণ দক্ষতায় নিচু ক্যাচ জমান গ্লাভসে। ২০৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ২৮ রানে তাসকিনের বলে নাজমুল হোসেন শান্ত স্লিপে ক্যাচ ফেলে দিলে জীবন পান তিনি। জীবন পাওয়ার করুনারত্নে যোগ করেন আরও ৯০ রান।
শুরুর দিকে হাফ চান্স দিয়েছিলেন থিরিমান্নেও। তাসকিনের বলে পয়েন্ট মিরাজ তার নাগাল পাননি।
চা-বিরতির আগে ৮০ রানে থাকা আরেক ওপেনার থিরিমান্নে তিন অঙ্কে যেতে তাড়াহুড়ো করেননি। অনেকটা সময় নিয়ে এগুতে থাকেন তিনি। করুনারত্নে আউট হওয়ার পর ওসাদা ফার্নেন্দোর সঙ্গে গড়ে উঠে তার জুটি। ২১৮ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান এই বাঁহাতি।
শেষ সেশনে তাসকিন অফ স্টাম্পের বাইরের লাইনে বল করে তাকে নাড়াতে চেয়েছিলেন, কাজ হয়নি। শেষ বিকেলে কিছুই হচ্ছে না দেখে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে চেষ্টা করা হতো একমাত্র বিকল্প। কিন্তু ৮০ ওভারের পর নতুন বল এভেইলেবল হলেও বাংলাদেশ অকারণে অপেক্ষা করল আরও পাঁচ ওভার।
নতুন বল নিয়ে উইকেট না পেলেও দিনের একদম শেষ ওভারে থিরিমান্নেকে ফেরানোর অবস্থায় গিয়েছিল বাংলাদেশ। শরিফুলের ভেতরে ঢোকা বলে তাকে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন মাঠের আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউতে দেখা যায় বল যাচ্ছে স্টাম্পের উপর দিয়ে।
হতাশার দিনে শেষ বিকেলে তাই আর আলো দেখা হয়নি মুমিনুল হকের দলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
(প্রথম দিন শেষে)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯১/১ (করুনারত্নে ১১৮, থিরিমান্নে ব্যাটিং ১৩১*, ওসাদা ব্যাটিং ৪০*; রাহি ০/৪৭, তাসকিন ০/৬৯, মিরাজ ০/৬৭, শরিফুল ১/৫২, তাইজুল ০/৫৬)
Comments