তামিমের দ্যুতিতে দারুণ শুরুর পর জোড়া ধাক্কা
শ্রীলঙ্কা প্রায় পাঁচশো রান করার ব্যাট করতে নেমে নান্দনিক শটের বাহার খুলে বসেন তামিম ইকবাল। তার আগ্রাসী অ্যাপ্রোচে দারুণ শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে লাঞ্চের আগে পর পর দুই উইকেট তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনের ঘন্টা দেড়েক পর উইকেটে মিলছে টার্ন আর বাড়তি বাউন্স। তাতে আভাস দিচ্ছে কঠিন সময়।
পাল্লেকেলেতে তৃতীয় দিনে ১৫ মিনিট ব্যাট করেই সপ্তম উইকেট পড়ার সঙ্গে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। এরপর ব্যাট করতে নেমে পুরো সেশনে ২৭ ওভার খেলে বাংলাদেশ তুলেছে ২ উইকেটে ৯৯ রান। ৯৬ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত আছেন তামিম। তার সঙ্গে ৯৮ রানের জুটির পর থিতু হয়ে ২৫ রান করে আউট হন সাইফ। এরপর তিনে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত টিকেছেন ৪ বল।
সাইফকে স্লিপে ক্যাচ বানান অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার প্রবিন জয়াবিক্রমা। শান্ত স্লিপে ক্যাচ দেন অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের বলে।
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতে অবশ্যই উইকেটের আচরণ ছিল নীরিহ। তবে তখন বল করছিলেন পেসাররা। স্পিনাররা আক্রমণে আসার পর থেকে বদলাতে থাকে পরিস্থিতি। দ্রুত রান আসলেও তৈরি হতে থাকে সুযোগ, দেখা মিলে বড় বড় টার্ন আর বাউন্সের।
বড় রানের নিচে ব্যাট করতে নেমেও প্রথম টেস্টের মতই শুরু আনেন তামিম। এক পাশে রানের খোঁজে থাকা ওপেনার সাইফ হাসান ছিলেন কিছুটা জড়সড়ো। তাকে এক পাশে রেখে ক্রিকেটীয় শটের পশরা মেলে ধরেন তামিম।
স্ট্রেট ড্রাইভ, অন ড্রাইভ, স্কয়ার কাটের মতো নিরাপদ শটে চার আসতে থাকে তার ব্যাটে। পেসারদের বলে ঝুঁকিহীন খেললেও অফ স্পিনার পেয়ে কিছুটা অস্থির হয়ে উঠেন তামিম। বারবার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় তাকে। কয়েকবার মিস হিট হলেও ফাঁকা জায়গায় পড়ায় বেঁচে যান তামিম।
৫৭ বলে সিরিজে টানা তৃতীয় ফিফটিতে পৌঁছেন যান তামিম। তখন দলের রান ছিল কেবল ৬১। তামিমকে মারতে দেখে অনেকক্ষণ জমে থাকা সাইফও ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারেন ছক্কা।
এই ছক্কার পরই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় তার। বল ঠেকালেও তাতে ছিল সাবলীল ভঙ্গি, মারলেও দ্বিধা ভর করেনি ব্যাটে। তবে থিতু হয়েও ইনিংসটা তার বড় হয়নি। অভিষিক্ত জয়াবিক্রমার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৫ রান করে। ৬২ বলের ইনিংসে সাইফ মেরেছেন ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কা। এরপর শান্ত কোন রান না করে ফিরে গেলে আশার সেশনে ক্ষত তৈরি হয় বাংলাদেশের।
আগের দিন শেষ সেশনের প্রায় পুরোটাই খারাপ আবহাওয়ায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শ্রীলঙ্কার পরিকল্পনাও তাই এলোমেলো। স্কোর পাঁচশো ছাড়িয়ে শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে ইনিংস ছেড়ে দেওয়া আর হয়নি। তৃতীয় দিনে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগে শুরু হলো খেলা। তাতে দ্রুত কিছু রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে তারা।
সকালে লঙ্কানরা খেলে ২১ বল, রানে আনে ২৪। আগের দিনের তিনটির সঙ্গে এদিন আরেক উইকেট পান তাসকিন আহমেদ। তার বলে রমেশ মেন্ডিস আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসে ইনিংস ঘোষণার ডাক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(তৃতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ২৯১/১) ১৫৯.২ ওভারে ৪৯৩/৭ (ইনিংস ঘোষণা) (থিরিমান্নে ১৪০, ওশাদা ৮১, ম্যাথিউস ৫, ধনঞ্জয়া ২, নিসানকা ৩০, ডিকভেলা ৭৭*, রমেশ ৩৩*; আবু জায়েদ ০/৬৯, তাসকিন ৪/১২৭, মিরাজ ১/১১৮, শরিফুল ১/৯১, তাইজুল ১/৮৩)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৭ ওভারে ৯৯/২(তামিম ব্যাটিং ৭০*, সাইফ ২৫, শান্ত ০, ; লাকমাল ০/১২ , বিশ্ব ০/১৭, ম্যাথিউস ০/৭ , রমেশ ১/৩৯, জয়াবিক্রমা ১/২০ )
Comments