ভর্তি ফরমের মূল্যবৃদ্ধি ও বাছাই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসছে জাবি

সমালোচনার মুখে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ার ফরমের মূল্যবৃদ্ধি ও দুই ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে, আগামী ১ জুন থেকে আবেদন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি জাবি প্রশাসন।
ফাইল ফটো

সমালোচনার মুখে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ার ফরমের মূল্যবৃদ্ধি ও দুই ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে, আগামী ১ জুন থেকে আবেদন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি জাবি প্রশাসন। 

করোনা পরিস্থিতি ‘পুনর্বিবেচনা’ করে আগামী ১৮ মে পরবর্তী কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।       

তিনি দাবি করেন, ‘দুই ধাপে আবেদন নেওয়া, ভর্তি প্রক্রিয়ার তারিখ নির্ধারণ ও ফি বৃদ্ধির পরিমাণ কোনটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিল না। বিষয়গুলো শুধু গত সভায় আলোচনা হয়েছিল।’

কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গত সভায় ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ নেয়া হয়েছিল বলে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেন ওই কমিটির একাধিক সদস্য। 

সদস্যরা জানান, ‘গত বৃহস্পতিবার ভর্তি পরীক্ষা কমিটির পঞ্চম সভা অনুযায়ী প্রাথমিক আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল আগামী ১ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত। যেখানে দুই ধাপে আবেদনপত্র নিয়ে জিপিএ ভিত্তিতে বাছাইয়ের কথা ছিল। এছাড়া পাঁচটি অনুষদের (এ, বি, সি, ডি ও ই) ইউনিটের ফর্মের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১০০টাকা এবং বাকি অনুষদ ও ইন্সটিটিউট গুলোতে ৭০০টাকা।’

বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হলে সমালোচনা ও প্রতিবাদ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শনিবার বিকেলে এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। এতে আগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে করোনা পরিস্থিতি ‘পুনর্বিবেচনা’ করে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

কমিটি সূত্রে জানা যায়, ‘জিপিএ’র ভিত্তিতে বাছাই করে ভর্তি পরীক্ষার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা থেকে সরে আসার সুপারিশ করা হয়েছে। বিগত বছরের ন্যায় ভর্তি পরীক্ষার কথাই ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা আবেদনকারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।’

শিগগিরি নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। যেখানে বাড়তি আবেদনপত্রের ফি না নেয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে না বলেও আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়।

জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজনা ইসলাম বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। আগামী ৫ ও ৬ মে উপাচার্য পরিষদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির মিটিংও আছে ঈদের পর। তখন আমরা হয়তো একটি ভাল সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।’ 

এর আগে, ভর্তি ফরমের মূল্য বৃদ্ধি ও বাছাই প্রক্রিয়াকে প্রশাসনের ‘অমানবিক’ ও ‘মুনাফালোভী’ মানসিকতা দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন অনুষদে ফরমের মূল্য ৪০০ ও ৬০০ টাকা থেকে যথাক্রমে ৭৫৫ ও ১১৫৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

ভর্তি পরীক্ষার ফি অনধিক ৩০০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষার ফলাফলকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা হিসেবে গণ্য না করার দাবি জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ‘অযৌক্তিক’ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আন্দোলন করে বাতিল বাধ্য করা হবে বলেও হুমকি দেন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English
Dummy candidates

Placing dummies as alternatives disenfranchises voters

We are witnessing an engineered intra-party contest as most of the independents belong to the ruling party.

5h ago