৭ মাস পর বৃষ্টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাগান মালিকদের স্বস্তি
অবশেষে সাত মাস পর গতকাল সোমবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বৃষ্টি হওয়ায় বাগান মালিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। জেলায় সর্বশেষ গত বছর ৯ অক্টোবর ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এরপর আর বৃষ্টি হয়নি। অনাবৃষ্টির কারণে আম ঝরে পড়ায় বাগান মালিকদের দিন কাটছিল উদ্বেগে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বটতলা হাটের মেহেরুল ইসলাম শহরের আলীনগর এলাকায় দুই বছরের জন্য ১৩ লাখ টাকায় একটি বাগান লিজ নেন। ওই বাগানে তার ৪০০ গাছ আছে।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, 'গত বছর জানুয়ারি মাস থেকেই অতিবৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সে কারণে মুকুল নষ্ট হয়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল। আর এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে বোটা শুকিয়ে আম ঝরে পড়ছিল। গত রাতে বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে। এখন আম দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মিস্ত্রিপাড়ার আমচাষী সাদেকুল ইসলামের জেলার সদর উপজেলার চকআলমপুর গ্রামে বাগান আছে। তিনি ১৪ বিঘার একটি আম বাগান লিজ নিয়েছেন। সেখানে ল্যাংড়া, খিরসাপাত, ফজলির প্রায় ১০০ গাছ আছে।
তিনি বলেন, 'আম গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়ার পরও আম ঝরে পড়ছিল। গত রাতে বৃষ্টি হওয়া আম ঝরে পড়া বন্ধ হবে। এই বৃষ্টি আমাদের কাছে আশীর্বাদ।'
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার রাতে জেলার সব উপজেলায় বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২০ মিলিমিটার (মিমি), শিবগঞ্জে ২০ মিমি, নাচোলে ১০ মিমি, গোমস্তাপুরে ১০ মিমি ও ভোলাহাটে ৫ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'অনাবৃষ্টির কারণে আম ঝরে পড়ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় আমের জন্য খুব ভালো হয়েছে। এবার বৃষ্টি হওয়ায় ঝরে পড়া রোধ হবে। আম দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং আকৃতিও ভাল হবে।'
তিনি জানান, গত বছর জেলায় জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এক হাজার ৩৮০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে ১৭ মিমি, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ মিমি, মার্চ মাসে ২০ মিমি, এপ্রিল মাসে ৭২ মিমি ও মে মাসে ১৪১ মিমি বৃষ্টি হয়েছিল।
তিনি জানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৪ হাজার ৮৭১ হেক্টর জমিতে আম বাগান আছে। এ মৌসুমে ৯৫ শতাংশ গাছ মুকুলিত হয়। গত বছর ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে জেলায় প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদন হয়েছিল।
'আশা করা হচ্ছে এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দুই লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদন হবে,' যোগ করেন উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
Comments