গুলশানে মৃত কলেজশিক্ষার্থী: প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত, পুলিশ এখনো পায়নি
গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা কলেজশিক্ষার্থীর মরদেহের প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা। তবে, ময়নাতদন্তের ফলাফলকে গোপনীয় হিসেবে উল্লেখ করে, এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হননি ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পুলিশ এখনো ময়নাতদন্তের ওই প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে পায়নি।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে শুধু মরদেহের শারীরিক অবস্থার বিশ্লেষণ থাকবে। বিস্তারিত কোনো তথ্য এতে থাকবে না। চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
ওই কলেজশিক্ষার্থীকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে কি না, জানতে এর আগে তার মৃতদেহের ডিএনএ ও ভিসেরা প্রতিবেদন চায় পুলিশ। এ দুটির নমুনা সিআইডির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সুদীপ চক্রবর্তী।
গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট ওই কলেজশিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্তের জন্যে তার মরদেহ ঢামেকে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে হবে বলে জানান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ।
এ ঘটনায় পরদিন ২৭ এপ্রিল বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন কলেজশিক্ষার্থীর বোন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, আনভীরের সঙ্গে ২১ বছর বয়সী ওই কলেজশিক্ষার্থীর ‘সম্পর্ক’ ছিল। তিনি প্রায়ই শিক্ষার্থীর ফ্ল্যাটে যেতেন এবং তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
পুলিশ শিক্ষার্থীর লেখা ছয়টি ডায়েরি উদ্ধার করেছে, যেখানে তিনি তার সঙ্গে আনভীরের সম্পর্ক নিয়ে লিখে গেছেন।
এ ঘটনায় পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তবে, মরদেহ উদ্ধারের পর তার স্ত্রীসহ পরিবারের চার সদস্য চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশ ছেড়ে গেছেন।
গত রোববার কলেজশিক্ষার্থীর ভাই ঢাকার একটি আদালতে সংসদ সদস্য ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাদীর জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালত ‘আত্মহত্যার প্ররোচনার’ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়।
পুলিশ ইতোমধ্যে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় গুলশানের ওই ফ্ল্যাটের মালিক ইব্রাহিম রিপন, তার স্ত্রী, নিরাপত্তা রক্ষী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ভবনের অন্য কর্মীদের জবানবন্দি নিয়েছে।
ইব্রাহিম জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটটি কে ভাড়া নিয়েছিলেন এবং সেখানে কে কে যেতেন ইত্যাদি বিষয়সহ সংশ্লিষ্ট সবকিছু নিয়েই পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
দ্য ডেইলি স্টারের নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি
আরও পড়ুন:
অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশ কলেজশিক্ষার্থীর পরিবার
‘গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আছে কলেজশিক্ষার্থীর ডায়েরিতে’
বসুন্ধরা এমডির আগাম জামিন শুনানি হচ্ছে না
আগাম জামিন আবেদন করলেন সায়েম সোবহান আনভীর
Comments