সহজে অভিযোগ ডিএনসিসির ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপে

‘সবার ঢাকা’ অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর একদিন পরেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মীরা কাওসার আলমের বাসার সামনে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। বিষয়টা তার কাছে বেশ বিস্ময়কর।

‘সবার ঢাকা’ অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর একদিন পরেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মীরা কাওসার আলমের বাসার সামনে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। বিষয়টা তার কাছে বেশ বিস্ময়কর।

গত ২০ বছর ধরে মিরপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা কাওসার। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা, সড়ক বাতি ও অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত সমস্যার কথা সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছেন। কিন্তু এজন্য প্রথমে তাকে অভিযোগের বিষয়টি লিখতে হয়েছে, ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে যেতে হয়েছে। আবেদন জমা দেওয়ার সপ্তাহখানেক পর বিষয়টি আমলে নিয়েছে সিটি করপোরেশন।

‘সবার ঢাকা’ অ্যাপটি চালু হওয়ার পর নগরের বাসিন্দাদের জন্য অন্তত অভিযোগ করার বিষয়টা এখন আগের চেয়ে সহজ হয়েছে।

কাওসার বলেন, ‘ইউটিউব ঘাঁটতে ঘাঁটতে আমি এই অ্যাপটির খোঁজ পাই। প্রথমে আমি বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দেইনি। পরে অ্যাপটি ডাউনলোড করে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি কিছু ছবিও আপলোড করি। পরের দিনই করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এসে জায়গাটি পরিষ্কার করে।’

উত্তর সিটির বাসিন্দাদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে গত ১০ জানুয়ারি অ্যাপটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করে ডিএনসিসি। এর মাধ্যমে মশা, রাস্তাঘাট, সড়ক বাতি, আবর্জনা, জলাবদ্ধতা, গণশৌচাগার, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও অবৈধ স্থাপনা সংক্রান্ত মোট আটটি বিষয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ আছে।

অ্যাপটি চালু হওয়ার চার মাসের মধ্যে গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এর মাধ্যমে ডিএনসিসির কাছে মোট দুই হাজার ২৫৭টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে এক হাজার ৯৩৫টি সমস্যার সমাধান হয়েছে। বাকি আছে ৩২২টি।

উদ্যোগটিকে পুরোপুরি নিখুঁত বলা না গেলেও অ্যাপটি নগরের বাসিন্দাদের মধ্যে একটা ইতিবাচক আবহ তৈরি করেছে। এই সেবাটি লম্বা সময় ধরে পাওয়া যাবে কি না, সে ব্যাপারেও নগরবাসীর আশঙ্কা রয়েছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ওলিউল্লাহ পাঁচ বছর ধরে মোহাম্মদপুরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বসবাস করেন। তার এলাকার একটি সড়কে দুরবস্থা নিয়ে তিনি দুসপ্তাহ আগে একটা অভিযোগ করেছিলেন।

ওলিউল্লাহ জানান, এই সমস্যাটি দ্রুত সমাধান হলেও পরবর্তীতে আবর্জনা অপসারণ সংক্রান্ত তার আরেকটি অভিযোগের সুরাহা এখনও হয়নি।

এছাড়া সংস্থাটির পক্ষ থেকে যোগাযোগ ঘাটতির বিষয়েও নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানান ওলিউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসির কাজ নিয়ে আমি আদৌ সন্তুষ্ট কি না, সেটা জানার প্রয়োজনও বোধ করে না তারা। এমনকি সমস্যাটির সমাধান সত্যিই হয়েছে কি না, সেটা জানতে তারা একটা ফোনও করেনি।’

জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী- এই দুটি ক্যাটাগরিতে আমরা অভিযোগগুলো বাছাই করি। সড়ক বাতি ও আবর্জনা সংক্রান্ত অভিযোগগুলো সুরাহা করা হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। তবে সড়ক সংস্কারের মতো কাজে খানিকটা সময় লাগে। আর যদি এতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় তাহলে আমরা সেটা অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেই।’

এই কর্মকর্তা জানান, এখন মহামারির কারণে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজটি ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না।

অ্যাপটি উদ্বোধনের সময় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, সরকারি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা দৃঢ় করার পাশাপাশি এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা সিটি করপোরেশনকে বিভিন্ন পরামর্শও দিতে পারবেন। ব্যবহারকারীর দিক থেকে এখানে ছবিসহ মন্তব্য করার সুযোগ আছে। যা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যথাযথ কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে যাবে।

একই সঙ্গে অ্যাপটিতে ৯৯৯ ও ৩৩৩- এই দুটি জরুরি হেল্পলাইন সেবা সংযুক্ত করা হয়েছে। আছে শিশুদের জন্য ‘ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট’ নামের একটি বিশেষ ফিচারও। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি সংস্থার জরুরি ফোন নম্বরও রাখা হয়েছে এখানে।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

The story of Gaza genocide survivor in Bangladesh

In this exclusive interview with The Daily Star, Kamel provides a painful firsthand account of 170 days of carnage.

1d ago