বেনাপোল স্থলবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ভারতীয় ট্রাকচালকরা

ভারতে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেশটির সঙ্গে যাত্রী চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আগেই। তবে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক আছে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধে ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও তাদের সহকারীদের জন্য কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও বেনাপোল স্থলবন্দরে তা মানা হচ্ছে না।
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেশটির সঙ্গে যাত্রী চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আগেই। তবে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক আছে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধে ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও তাদের সহকারীদের জন্য কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও বেনাপোল স্থলবন্দরে তা মানা হচ্ছে না।

এ অবস্থায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি তদারকির ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। একইসঙ্গে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

লোকবল সংকটের কারণ দেখিয়ে সুরক্ষা ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সব প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে, প্রতিদিন ভারত থেকে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় শ ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আসে। এসব ট্রাকের চালক ও তাদের সহকারীসহ দৈনিক হাজারখানেক ভারতীয় মানুষ বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করেন।

এ ছাড়া, বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী-নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমজীবী মানুষসহ সব মিলিয়ে ১০ হাজার মানুষ এই এলাকায় বাস করেন।

সম্প্রতি দেখা যায়, ভারত সীমান্ত থেকে বন্দর এলাকায় প্রবেশের সময় বেশিরভাগ ট্রাকের চালক ও সহকারীদের মুখে মাস্ক নেই। এমনকি বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে অনেকে দায়িত্ব পালন করছেন মাস্ক না পরেই। ভারত থেকে আসা ট্রাকের চালক ও সহকারীদের অনেকে দল বেঁধে বেনাপোল বাজারে ঘুরে বেড়ান।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মিতয়ার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাকচালকরা যেমন বেনাপোল বন্দরে আসছেন, তেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও পণ্য নিয়ে ট্রাকচালকরা ভারতে যাচ্ছেন। তাই এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষেরই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও সুরক্ষা বিধি মেনে চলা জরুরি।

মিতয়ার রহমানের অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মামুন তরফদারের অবহেলাই সুরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার কারণ।

এ কারণে দায়িত্ব থেকে মামুন তরফদারের অব্যাহতি দেওয়ার দাবিও জানান মিতয়ার।

বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, আগে করোনা সংক্রমণ রোধে রেলস্টেশনে বন্দর কর্তৃপক্ষের হয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কাজ করতেন। এখন আর কেউ আসেন না।

সাইদুর রহমানের ভাষ্য, বর্তমানে ভারত থেকে রেল পথেও পণ্য আসছে। সে ক্ষেত্রে এখানকার জন্যও সুরক্ষা ব্যবস্থা সচল রাখা জরুরি।

বেনাপোল স্থল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল ডেইলি স্টারকে বলেন, সুরক্ষা ব্যবস্থা মেনে চলার জন্য আগে বন্দরে সব কিছুর বন্দোবস্ত ছিল। এখন জনবল সংকটের কারণে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

আব্দুল জলিল আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে ট্রাকচালক ও বন্দরের শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সব প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের অবহিত করলে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago