শিমুলিয়া ঘাটেও যাত্রী নিয়ে ছেড়েছে ৫ ফেরি

183410822_180765557242963_7892287478984605787_n.jpg
পাঁচটি ফেরিতে প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী পদ্মা পার হয়েছেন বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। ছবি: স্টার

নৌপথে ফেরি বন্ধের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে উপস্থিত যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলেছে পাঁচটি ফেরি। কুঞ্জলতা, এনায়েতপুরী, শাহপরান, কুমিল্লা, ক্যামেলিয়া ফেরিতে প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী পদ্মা পার হয়েছেন বলে জানিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ।

আজ শনিবার সরেজমিনে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে ঘাটে প্রবেশ পথগুলোতে যেন গাড়ি ঢুকতে না পারে সেজন্য ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এর জন্য প্রায় চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যাত্রীদের ঘাটে আসতে দেখা যায়। সকাল ৮টার দিকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে অ্যাম্বুলেন্সবাহী কুঞ্জলতা ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে আসে। ফেরি আনলোড হলে যাত্রীরা জোর করে ফেরিতে উঠে পড়েন।

প্রায় এক ঘণ্টা পর কোনো উপায় না পেয়ে ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরি ছাড়তে বাধ্য হয়। এরপর ফেরি এনায়েতপুরী শুধু যাত্রী নিয়ে বেলা সাড়ে ১২টায় ও শাহপরান ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে যাত্রী, ১৪টি লাশবাহী গাড়ি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি নিয়ে ঘাট ছেড়ে যায়। এরপরও অনেক যাত্রীকে শিমুলিয়া ঘাটের বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

দুপুর সোয়া ২টায় ফেরি কুমিল্লা ৬টি লাশবাহী গাড়ি নিয়ে ও আড়াইটার দিকে ফেরি ক্যামেলিয়া ঘাট ছেড়ে যায়।

ঢাকা থেকে আসা যাত্রী আলী আজগর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সেহেরি খেয়ে তিনি ঘাটের উদ্দেশে রওয়ানা হন। তিন কিলোমিটার পায়ে হেটে ঘাটে এসে দেখতে পান ফেরি বন্ধ।

182720129_2072127672934349_6036044823792412966_n.jpg
ফেরি আনলোড হলে যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়েন। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, ‘মধ্যরাতে দেওয়া বন্ধের নির্দেশনা জানতে পারিনি। তিনটি ফেরিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠিনি। এর জন্য ভোর ৫টায় ঘাটে এসে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি যদি কোনো ফেরি আবার চালু হয়।’

শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘ঢাকার মোহাম্মাদপুর এলাকার ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করার জন্য শরীয়তপুর যাচ্ছিলাম। এসে দেখি ফেরি বন্ধ। এখন আমার ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। তাই ঘাটে অপেক্ষা করছি যদি ফেরি চালু হয় তবে যেতে পারব।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. মাহফুজ আফজাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত যাত্রীদেরকে বুঝিয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল। কিন্তু, তারা কথা শুনতেই রাজি নন। ফেরি টার্মিনালে এসে ভিড় করতে শুরু করেন যাত্রীরা।’

‘বিষয়টি জেনে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয় থেকে ফেরি চালুর সিদ্ধান্ত আসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। সকাল ৯টায় একটি ফেরি ও বেলা সাড়ে ১২টায় দুটি ফেরির মাধ্যমে যাত্রী ও লাশবাহী গাড়ি পার করা হয়েছে,’ বলেন তিনি।

182994129_240064314535710_4035299203336949663_n.jpg
কোনো উপায় না পেয়ে ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরি ছাড়তে বাধ্য হয়। ছবি: স্টার

বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন ম্যানেজার আহমেদ আলী বলেন, ‘তিনটি ফেরির মাধ্যমে কয়েক হাজার যাত্রীকে পার করা হয়েছে। এরপর শুধু লাশবাহী গাড়ি পার করার নির্দেশনা এসেছে। যাত্রী পার করতে চাই না। যদি লাশের গাড়ি সঙ্গে হাজার হাজার যাত্রী ফেরিতে উঠে পড়েন, তাহলে করার কিছু থাকে না।’

করোনা বিস্তার রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার মধ্যরাত থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধু রাতের বেলায় পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল করবে বলে জানিয়েছিল বিআইডব্লিউটিসি।

আরও পড়ুন:

যাত্রী নিয়েই পাটুরিয়া ঘাট ছেড়েছে ৩ ফেরি

Comments

The Daily Star  | English
NCP protest rally for election commission reform

NCP to hold protest rally in front of EC demanding its reconstitution

Calls on govt to hold local elections without delay

58m ago