চট্টগ্রামে কাভার্ডভ্যানের চালক ও সহকারীকে হত্যা, ৭ মাস পর গ্রেপ্তার ৩

চট্টগ্রামে কাভার্ডভ্যানের চালক ও তার সহকারীকে হত্যার সাত মাস পর তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চট্টগ্রামে কাভার্ডভ্যানের চালক ও তার সহকারীকে হত্যার সাত মাস পর তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তার তিন জন হলেন- মো. মিরাজ হাওলাদার (৩০) এবং তার সহযোগী আবু সুফিয়ান সুজনকে (২১) গতকাল রাতে এবং গত বুধবার রবিউল হোসেন বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে মিরাজ ও সুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং বাবু বর্তমানে পুলিশের রিমান্ডে আছে।

আজ শনিবার নগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুক উল হক এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, কাভার্ডভ্যানে থাকা মালামাল লুট করতেই এই হত্যাকাণ্ড। তবে, আসামিরা ট্রাকে থাকা মালামাল গাড়ির যন্ত্রাংশ হওয়ায় তা সরিয়ে নিতে কিংবা বিক্রি করতে পারেনি।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত বছরের ২ অক্টোবর এসিআই কোম্পানির গাড়ির যন্ত্রাংশ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে কাভার্ডভ্যানটি। কাভার্ডভ্যানের চালক ছিলেন রিয়াদ হোসেন সাগর এবং তার সহকারী ছিলেন মোহাম্মদ আলী। রিয়াদের হাতে ড্রাইভিং শেখা মিরাজ হাওলাদার ও আবু সুফিয়ান সুজন ঢাকা যাওয়ার কথা বলে তাদের আরেক সহযোগী রবিউল হোসেন বাবুসহ তিনজন সিটি গেট থেকে কাভার্ডভ্যানে ওঠে।

ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ‘কাভার্ডভ্যানটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জোরারগঞ্জ থানার কমলদহ এলাকায় গেলে রাতের খাবার খাওয়ার বিরতি নেয় তারা। খাওয়া শেষে তারা গাড়িতে উঠলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবু ড্রাইভারের গলা আর সুজন হেলপারের গলায় একযোগে ছুরিকাঘাত করে। অন্যদিকে মিরাজ গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে। একটু সামনে গিয়ে তারা গাড়িকে আবার চট্টগ্রামের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে।’

কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘গাড়ি একটু সামনে এলে হেলপার আলীকে তারা মহাসড়কের পাশে পুকুরে ফেলে দেয়। কিন্তু, আলী উঠে দাঁড়ালে আবার তার গলায় ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কাভার্ড্যভানের চালক সাগরের মরদেহ টোল রোডে প্রবেশ করে হালিশহর থানা এলাকায় ফেলে দেয়। মরদেহ ফেলার আগে সাগরের বিকৃত করে দেয়, যাতে কেউ চিনতে না পারে। এরপর গাড়ির জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে কাভার্ডভ্যানটি বড়পুল এলাকার মনসুর মার্কেটের সামনে রেখে তারা পালিয়ে যায়।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩ অক্টোবর নগরীর বন্দর থানাধীন পিসিরোডের বড়পোল মনসুর মার্কেটের সামনে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে পুলিশ। কাভার্ডভ্যানের কেবিনের ভিতরে সিটসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তমাখা ছিল। পরদিন হালিশহর থানা পুলিশ নগরীর বে-টার্মিনালের পূর্ব পাশে নির্মাণাধীন নতুন পতেঙ্গা লিং রোডের ধারে ডোবার মধ্যে ওই কভার্ডভ্যানের চালক মো. রিয়াদ হোসেন সাগরের মরদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু, হেলপার মো. আলী নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় হালিশহর থানা পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে।

একইদিন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের একটি পুকুর থেকে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে জেলা পুলিশ। শুরুতে অজ্ঞাত পরিচয় থাকলেও পরে মরদেহটি নিখোঁজ হেলপার আলীর বলে শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় পুলিশ আরেকটি মামলা করে।

পুলিশ সূত্র জানায়, হালিশহর থানা পুলিশের দায়ের করা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় নগর গোয়েন্দা পুলিশ। মামলা তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানত পারে জোরারগঞ্জেও আরেকটি মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে মামলার তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বের হয়ে আসে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago