মৌলভীবাজার পেট-জোড়া শিশুর জন্ম

পরিবারের নতুন শিশুর অপেক্ষায় ছিলেন জুয়েল-তাহমিনা দম্পতি। রাত ১১টায় সংবাদ আসে, অস্ত্রোপচার শেষে যমজ শিশু জন্ম দিয়েছেন প্রসূতি তাহমিনা। এখানে আনন্দ দ্বিগুণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, শিশু দুটির পেট জোড়া লাগানোর কথা শুনেই নিমেষেই তাদের সব আনন্দ হারিয়ে যায়। আনন্দের পরিবর্তে পান দোকানদার জুয়েলের একটাই দুশ্চিন্তা, কীভাবে করাবেন সন্তানের ব্যয়বহুল চিকিৎসা?
Moulvibazar
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

পরিবারের নতুন শিশুর অপেক্ষায় ছিলেন জুয়েল-তাহমিনা দম্পতি। রাত ১১টায় সংবাদ আসে, অস্ত্রোপচার শেষে যমজ শিশু জন্ম দিয়েছেন প্রসূতি তাহমিনা। এখানে আনন্দ দ্বিগুণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, শিশু দুটির পেট জোড়া লাগানোর কথা শুনেই নিমেষেই তাদের সব আনন্দ হারিয়ে যায়। আনন্দের পরিবর্তে পান দোকানদার জুয়েলের একটাই দুশ্চিন্তা, কীভাবে করাবেন সন্তানের ব্যয়বহুল চিকিৎসা?

এমনিতেই যমজ সন্তান নিয়ে আগ্রহ আর উৎসাহের কমতি থাকে না পরিবার আর প্রতিবেশীদের। কিন্তু জোড়া কন্যাশিশুর জন্মে ভয় আর শঙ্কা তৈরি হয়েছে তাদের মা-বাবার মনে।

চিকিৎসকরা বলছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। তাদের আলাদা করতে অস্ত্রোপচার দরকার। এটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ৫ মে রাতে মৌলভীবাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশু দুটি এখন সুস্থ আছে। তাদের কৃত্রিম উপায়ে মায়ের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। চলছে স্যালাইনও। দুই বোন সারাক্ষণ হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে। মা-বাবার মুখে নেই কোনো আনন্দের ছাপ। দীর্ঘ হচ্ছে দুশ্চিন্তার রেখা।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের সিংরাউলি গ্রামে বসবাস করেন জুয়েল-তাহমিনা দম্পতি। শিশু দুটির চিকিৎসার ব্যয় বহনের ক্ষমতা নেই তাদের।

জুয়েল আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পেশায় তিনি পান দোকানদার। জুয়েল মিয়া ও তাকলিমা দম্পতির চার বছরের আরেকটি কন্যা শিশু রয়েছে।

জুয়েল আহমদ বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। আমার বাচ্চা দুটিকে বাঁচানোর জন্য কী করব ভেবে পাচ্ছি না। উন্নত চিকিৎসা করাতে হলে ঢাকা মেডিকেল ও শিশু হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু এই চিকিৎসাটা অনেক ব্যয়বহুল। আমি এত টাকা কোথায় পাব?’

শিশু দুটির মা তাহমিনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যমজ শিশু হলে সব মা-ই খুশি হন। কিন্তু আমার যে যমজ শিশু হয়েছে, তাদের পেট জোড়া লাগানো। এখন ডাক্তাররা বলেছেন চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য আমার নেই।’

তাদের প্রতিবেশী জাবেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জোড়া বাচ্চা আলাদা করার চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। এ পরিবারটির সামর্থ্য নেই এই চিকিৎসা করানোর। আমরা চাই যাতে সরকারি সহযোগিতায় বাচ্চা দুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শামীম আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বর্তমানে বাচ্চা দুটির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা ফ্লোরিট দিচ্ছি। শুক্রবার রাত থেকে মায়ের দুধ ড্রপারের মাধ্যমে খাওয়ানো হচ্ছে। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করেছি। পরামর্শ দিয়েছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ কিংবা জাতীয় শিশু স্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরাও দেখছি কীভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায়।’

গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা হক পর্ণা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাচ্চাদের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। মুখে খাবার নিচ্ছে। এমনিতে কোনো সমস্যা নাই। তবে এসব শিশুদের বাঁচানো কঠিন, অনেকটা বিরল বলা যায়। দুই বোনকে আলাদা করতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঠাতে হবে। সেখানে মেডিকেল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবেন তাদের কী চিকিৎসা দেওয়া উচিত।’

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago