ঢাকায় এডিস মশার লার্ভা উপস্থিতির হার আশঙ্কাজনক: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার লার্ভার যে উপস্থিতি দেখা গেছে তা আশঙ্কাজনক বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ রোববার দুপুরে ভার্চুয়াল বিফ্রিংয়ে অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন।
Health_3May21.jpg
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার লার্ভার যে উপস্থিতি দেখা গেছে তা আশঙ্কাজনক বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ রোববার দুপুরে ভার্চুয়াল বিফ্রিংয়ে অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বর্ষাকাল প্রায় এসে যাচ্ছে। বৃষ্টি হতে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমের আগে যে জরিপ করা হয়, সেটি আমরা সম্পন্ন করেছি। ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর কারণে আমরা কঠিন সময় অতিবাহিত করেছি। ২০২০ সালে সে পরিস্থিতি খানিকটা সহনীয় ছিল। আমরা চাই, এই করোনাকালে ডেঙ্গু যেন আমাদের নতুন করে বিপদগ্রস্ত না করে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড (লালমাটিয়া ও ইকবাল রোড) ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে (সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী) অনেক বেশি পরিমাণে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, লার্ভার ঘনত্ব আমরা যেভাবে পরিমাপ করি সেই বিবেচনায় উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৩, ৩১, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনিপুর, মীরেরবাগ, শেওড়াপাড়া, নূরজাহান রোড, আসাদ এভিনিউ, শাহজাহান রোড, মগবাজার, ইস্কাটন, মধুবাগ, নোয়াটোলা এলাকায় লার্ভার ঘনত্ব অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে।’

‘দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মালিবাগ, গুলবাগ, শান্তিবাগ, মিন্টু রোড, বেইল রোড, কাকরাইল, সিদ্দিক বাজার, ওসমান গণি রোড, শাঁখারীবাজার, আরকে মিশন রোড, অভয় দাশ লেন, মিল ব্যারাক এলাকায় অনেক বেশি পরিমাণে এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করতে পেরেছি। প্লাস্টিকের পাত্র, পানির ট্যাঙ্ক, ফুলের টব, নির্মাণাধীন ভবন, লিফটের গর্তে অত্যন্ত আশঙ্কাজনকভাবে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ বয়স্ক এডিস মশা তৈরি হবে। এই মশা রোগ বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখে। সেখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে উৎসে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রত্যেকে যেন নিজ নিজ বাড়িতে পরিত্যক্ত কনটেইনার বা টব যেন আমরা পরিষ্কার করে ফেলি। কেউ যদি বেশি সময়ের জন্য বাসা ছেড়ে যাই, যেসব জায়গায় পরিষ্কার পানি জমে থাকতে পারে সেগুলো যেন খালি করে যাই। ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর কারণে যে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে, সেটি যদি এই করোনাকালে হয় তাহলে মৃত্যুর মিছিল বাড়াবে কি না বরাবরই সে আশঙ্কা থেকে যায়’— বলেন নাজমুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় যে ভ্যারিয়েন্টটি আমরা চিহ্নিত করেছি, আমরা মনে করি, ভ্যারিয়েন্ট যা-ই হোক না কেন, চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রায় কাছাকাছি থেকে গেছে। খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। আমরা সংক্রমণের এই শৃঙ্খল যদি ভেঙে দিতে না পারি, আজ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এসেছে, কাল নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাবে। আমাদের রোগীর সংখ্যা কিন্তু কমবে না। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, উপকরণ, জনবল কিন্তু অসীম নয়। ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ইতোমধ্যে হাসপাতালগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাইবো, জ্বর হলে বাসায় চিকিৎসা না নিয়ে হাসপাতালে যাবেন এবং চিকিৎসা সেবা সেখান থেকেই গ্রহণ করবেন।’

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে আছে। এটি একটি আশা জাগানিয়া খবর। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভোগার কারণ নেই। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে যে সংখ্যক মানুষ রাজধানী থেকে গ্রামের পথে ছুটে যাচ্ছেন এবং পথে যে পরিস্থিতিটি তৈরি হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা সবার প্রচেষ্টায় যে জায়গায় এসেছি, এখানে যদি শিথিলতা দেখানো হয়, তাহলে ঈদের পরে যে কোনো সময় পরিস্থিতি ভালো থেকে খারাপের দিকে চলে যেতে পারে। এই আশঙ্কা আমাদের আছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago