এখনো বেতন-ভাতা পাননি ২০০ পোশাক কারখানার শ্রমিক

প্রতীকী ছবি

ঈদের আগে সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করতে পারেনি সবগুলো তৈরি পোশাক কারখানা। এই সেক্টরের শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানান, প্রায় ২০০ কারখানার শ্রমিকরা এখনো বেতন-ভাতা পাননি।

গতকাল পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘সোমবার পর্যন্ত সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের শেষ দিনে ৯২ শতাংশ কারখানা তাদের শ্রমিকদের উৎসব ভাতা পরিশোধ করেছে। এছাড়া ৯০ শতাংশ কারখানা এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেছে।’

আগামী দুদিনের মধ্যে বাকি কারখানাগুলোও বেতন-ভাতা পরিশোধের কাজ শেষ করবে জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘১০ থেকে ১২টি কারখানা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারবে কি না—সে ব্যাপারে এখনো আমাদের সংশয় আছে। কারণ তাদের আর্থিক অবস্থা ততটা ভালো না। এগুলোর বেশিরভাগ ছোট কারখানা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের আগেই যেন এই কারখানাগুলো সব পাওনা পরিশোধ করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।’

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠনের এই নেতা বলেন, ‘পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে ৪০টির মতো কারখানা খুব নাজুক অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় বিজিএমইএর পক্ষ থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যাটি অনেক কমে এসেছে।’

ফারুক হাসানের ভাষ্য, বেতন-ভাতা পরিশোধের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ছোট অনেক কারখানার সমস্যা হচ্ছে। হয় তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। নয়তো আন্তর্জাতিক ক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে পাওনা টাকা বুঝে পেতে দেরি হচ্ছে।

তার ওপর ব্যাংকগুলো আর্থিক সংকটে থাকা ছোট কারখানাগুলোকে ঋণ দিতে আগ্রহী হচ্ছে না জানিয়ে হাসান বলেন, ‘এ কারণে ঋণের জন্য আমরা ব্যাংকগুলোর সঙ্গেও কথা বলছি। যাতে কারখানাগুলো শ্রমিকদের পাওনা মেটাতে পারে।’

শ্রমিকদের ঈদের ছুটির ব্যাপারে হাসানের বক্তব্য, কারখানা মালিকরা ইতোমধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ছুটি বাড়ানোর কাজ শুরু করেছেন। রোববার এক সভায় শ্রম মন্ত্রণালয় প্রয়োজন অনুযায়ী ছুটি বাড়ানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছে।

অবশ্য, বিজিএমইএ সভাপতির দেওয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য প্রত্যাখান করেছেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার। তার দাবি, গতকাল পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কারখানা এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেছে। আর ৮০ শতাংশ কারখানা উৎসব ভাতা দিয়েছে।

এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘রোজা ও করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। তাই কারখানা কর্তৃপক্ষের সময়মতো শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা উচিত।’

এর আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান শিল্প মালিক, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ১০ মে’র মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ ছাড়া গত রবিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে শ্রম প্রতিমন্ত্রী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে তিন দিনের সরকারি ছুটিতে বাড়িতে না গিয়ে যার যার অবস্থানে থাকার জন্যও শ্রমিকদের অনুরোধ জানান।

বিবৃতিতে শ্রমিকদের উদ্দেশে মন্নুজান সুফিয়ান জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকরা তিন দিনের বেশি ছুটি কাটাতে পারেন। তবে তাদের সবাইকে কারখানা সংলগ্ন বাসস্থানেই থাকতে হবে।

বকেয়া পাওনার বিষয়ে বক্তব্যের জন্য শিল্প পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিনও জানান, এ বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য তিনি পাননি।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

20m ago