কুড়িগ্রামে পিআইওর ওপর হামলা: ২ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদে ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) প্রকল্পের টাকা বিতরণের সময় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবিউল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজন হলেন— রাজীবপুর সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা ও একই ইউনিয়নের ছাত্রলীগকর্মী আব্দুর রহমান বিশ্বাস। গত রাতে জুয়েলকে ও আজ সকালে রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
রাজীবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাশ সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরোর নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা গতকাল দুপুরে তার ওপর হামলা চালায়। পরে কয়েকজন সহকর্মী ও গ্রাম পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। গত রাতেই আমি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর পুরো দায়িত্ব না দিয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে নিয়ম-নীতি অনুসারে শৃঙ্খলার সঙ্গে সুবিধাভোগীদের মধ্যে টাকা বিতরণ করায় আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আকবর হোসেন হিরো। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়নি। আমরা তাকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’
উপজেলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পিআইও দুপুরের মধ্যে টাকা বিতরণ শেষ করতে তাড়াহুড়ো করছিলেন। তাতে স্থানীয় জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দেয়।’
ঘটনার সময় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ছিলেন চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি রুমের ভেতরে ছিলাম। হৈ চৈ শুনে বাইরে বের হয়ে শুনি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে মারধর করার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।’
রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নবিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়া খুবই দুঃখজনক। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ হামলায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনবে।’
রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবিউল হাসান আরও বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা সাত জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মেহেদী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা ও ছাত্রলীগকর্মী আব্দুর রহমান বিশ্বাস। এই ঘটনায় জড়িত না। তাদের ফাঁসানো হয়েছে।’
Comments