প্রবাসে

স্পেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদ উদযাপন

ঈদের নামাজ অংশ নিয়েছেন প্রবাসীরা। ছবি: কবির আল মাহমুদ

গত বছরের মতো কোনো বিশেষ প্রস্তুতি ছাড়াই আজ বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন স্পেন-প্রবাসী বাংলাদেশিরা। করোনা মহামারির মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাদামাটাভাবেই ঈদ কাটছে তাদের। করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও নিরাপদে থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন দেশটির মুসল্লিরা।

স্পেনে ধীরে ধীরে করোনার প্রকোপ কমছে। দীর্ঘ ছয় মাস পর গত রোববার দেশটিতে এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়। তবে, স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা থাকলেও মাঠে জনসমাগমের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মসজিদগুলোতে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

স্পেনের সবচেয়ে বড় মসজিদ ভেনতাস ইসলামিক সেন্টার মসজিদে আজ সকাল ৮টায় ঈদের বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সরওয়ার মাহমুদ, দূতাবাসের দূতালয় প্রধান আব্দুর রউফ মন্ডল ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রেদোয়ান আহমদ এ জামাতে নামাজ আদায় করেন।

রাজধানী মাদ্রিদে বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশ মসজিদ ঈদের নামাজ আদায় করেন বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুহতাশিমুল ইসলাম, বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম মজুমদার, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, ভিলিয়ান্তে বাংলার সভাপতি মো. ফজলে এলাহীসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে প্রবেশ করছেন প্রবাসীরা। ছবি: কবির আল মাহমুদ

সরকারের নির্দেশনা মেনে জনসমাগম এড়াতে বাংলাদেশি পরিচালনাধীন বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশ মসজিদে পরপর পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে, দ্বিতীয় জামাত ৮টা ১৫মিনিটে, তৃতীয় জামাত ৯টায়, চতুর্থ জামাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ও সর্বশেষ জামাত ১০টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়। এ ছাড়া, আল হুদা জামে মসজিদে চারটি, শাহজালাল ফুলতলী জামে মসজিদে চারটি ও আল আমান জামে মসজিদ সংক্রিস্টোবালে তিনটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

স্পেনে মাস্ক পরা সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক হওয়ার কারণে সব মুসল্লিকে মাস্ক পরেই মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। মসজিদে বাইরে ছিল প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

নামাজ শেষে স্পেন-প্রবাসী আবু হাসনাত হিরো বলেন, ‘দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে পেরে খুবই ভালো লাগল। তবে, আগের মতো খোলা মাঠে একসঙ্গে নামাজের সেই আনন্দ পাইনি। মহামারির কারণে সব আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।’

নামাজ ছাড়া ঈদের অন্যান্য চিত্রও এ বছর ছিল ভিন্ন। কেউ কারো বাসায় বেড়াতে যাননি। ঈদের কোলাকুলি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ও আত্মীয়-প্রতিবেশীদের সঙ্গে উদযাপন— কিছুই হয়নি। ফলে একরকম নিষ্প্রাণ ঈদ উদযাপন করতে হচ্ছে স্পেনের প্রবাসী বাংলাদেশি ও অন্যান্যদের।

করোনা সংকট ও এর ফলে ঘটা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে স্পেন-প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। চাকরি হারিয়েছেন হাজারো বাংলাদেশি। অনিশ্চিত সময়ে বছর ঘুরে আসা চিরচেনা ঈদের আবহে তারা ছন্দ মেলাতে পারছেন না।

প্রতিবছরের মতো এবার পরিবারের জন্যে দেশে টাকাও পাঠাতে পারেননি বেশিরভাগ প্রবাসী-বাংলাদেশি। পরিবারকে ঈদের টাকা না পাঠাতে পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশি, স্প্যানিশ নাগরিকসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সরওয়ার মাহমুদ। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও শুভেচ্ছা জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রবাসীরা নিয়মকানুন মেনে ঈদ উদযাপন করছেন। গোটা বিশ্ব এখন এক কঠোর ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছে। এমন খারাপ সময় থাকবে না। আমাদের সুদিন আসবেই।’

কবির আল মাহমুদ: স্পেন-প্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank invites applications for digital bank

Bangladesh Bank buys additional $134 million from banks

Bangladesh Bank (BB) today purchased $134 million from five commercial banks through multiple auctions as part of its ongoing strategy to contain the depreciation of the US dollar against the local currency, the taka.

31m ago