অডিও গানের প্রতিষ্ঠান এখন নাটকের

Music logo
ছবি: সংগৃহীত

ঈদ উপলক্ষে আগে বিভিন্ন অডিও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক নতুন গান প্রকাশ পেতো। এখন সেটা হাতেগোনা কয়েকটি গানে ঠেকেছে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় অডিও প্রতিষ্ঠানগুলো এখন পরিণত হয়েছে নাটক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে।

গত পাঁচ বছরে এসব অডিও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দেখলে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।

বিভিন্ন উৎসবে এই অডিও প্রতিষ্ঠানগুলোই সবচেয়ে বেশি নাটক প্রযোজনা করে আসছে। অথচ তাদের পরিচিতি, খ্যাতি, অর্থ সবকিছুই এসেছে গান বিক্রি থেকেই।

এখন বেশিরভাগ অডিও প্রতিষ্ঠানই গান বিক্রি করেন নাটকের মধ্যে। তারা কারণে-অকারণে একাধিক গান ব্যবহার করেন নিজেদের প্রযোজিত নাটকে। নাটকের খরচের মধ্যেই গানের মিউজিক ভিডিও অনায়াসে হয়ে যায়। বাড়তি খরচ করতে হয় না। পরে নাটকে প্রচারিত গানটা আলাদাভাবে নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়। আলাদাভাবে এখান থেকে অর্থও আসে।

গানের মিউজিক ভিডিও করতে যে অর্থ ব্যয় হতো তারচেয়ে কম খরচে নাটক প্রযোজনা করেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এরপর এসব নাটকের ইমোশন অংশ, প্রেমের অংশ, হাসির অংশ, গানের অংশ আলাদা আলাদাভাবে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়।

সব মিলিয়ে গানের চেয়ে বেশি আয় হয় বলে ২০১৬ সালের পর থেকে নাটক প্রযোজনার দিকে আগ্রহী হয়েছে অডিও প্রতিষ্ঠানগুলো। ‘গানের ব্যবসা নেই’ আওয়াজ তুলে নতুন গান প্রকাশ কমিয়ে নাটক প্রযোজনায় মনোযোগী হয়েছে তারা।

কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ আজ বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কণ্ঠশিল্পীরা একসময় গানের মিউজিক ভিডিওর বাজেট পাঁচ থেকে ১০ লাখ করলো। যুগের সঙ্গে তাল মেলানোর কথা বলে দামী ভিডিও বানাতে আরম্ভ করলো। গান বানানোর চেয়ে মিউজিক ভিডিওর বাজেট বেশি হতে লাগলো। অডিও প্রতিষ্ঠানগুলো দেখলো এসব মিউজিক ভিডিও থেকে তেমন অর্থ আসছে না। আর আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থাও তেমন সুবিধাজনক না এসবের জন্য। গানের চেয়ে মিউজিক ভিডিওর দিকে বেশি মনোযোগী হয়ে উঠলেন শিল্পীদের অনেকেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘অডিও প্রতিষ্ঠানগুলো দেখলো একটা নাটক করে মিউজিক ভিডিওর চেয়ে কম খরচে বেশি অর্থ আয় হচ্ছে। পুরো নাটক প্রচারের পর নাটকের বিভিন্ন পর্ব আলাদা আলাদা করে ইউটিউবে প্রকাশ করছে। একটা গানের মিউজিক ভিডিওর চেয়ে এসবের ব্যাপ্তি বেশি। ফলে আয়ের সম্ভাবনাও অনেক। কাজেই, তারা গান প্রকাশ কমিয়ে নাটকের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে উঠলেন।’

‘এই প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পকে ব্যবহার করে ব্যবসা করতে এসেছে। যেখানে ব্যবসা আছে, সেখানে বিনিয়োগ করবে। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তবে একটা আশার কথা হচ্ছে- ভালো কথা, সুর, গায়কী, কম্পোজিশন না হলে এখন গান শোনে না শ্রোতারা। গান দেখার চেয়ে শোনার বিষয়টা ফিরে আসছে। আশা করি সামনে আরও ভালো হবে,’ বলেন তিনি।

অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি’র কর্ণধার এসকে শাহেদ আলী পাপ্পু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এটা ঠিক যে এখন নাটকের মধ্যে আমাদের গান বেশি যাচ্ছে। সেই কারণে আলাদাভাবে বেশি গান তৈরি হচ্ছে না। নাটকের মধ্যে গানের কারণে আমাদের বাজেট, সময় একটু বেশি লাগছে। কিন্তু গান তো দিচ্ছি শ্রোতা-দর্শকদের।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা ঠিক অনেক সময় অপ্রয়োজনেও গান ব্যবহার করা হচ্ছে নাটকে। কিন্তু গান প্রকাশ তো বন্ধ করিনি। নাটকের মধ্য দিয়ে হলেও সেটা অব্যাহত রয়েছে। এবার ঈদে আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ছয়টি নাটক প্রযোজনা করেছি। সাতটি নতুন গান প্রকাশ করেছি।’

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

2h ago