ঈদের দিনেও দ্বিগুণ ভাড়ায় বাড়ি ফিরেছেন মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

ঈদের আগে বাড়ি যেতে পারেননি। ঈদের দিনও প্রায় অর্ধেক শেষ। তারপরও বাড়ির পথে মানুষ। দেরিতে হলেও পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চান তারা।

আজ ঈদের দিন শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গাজীপুরের টঙ্গী, স্টেশন রোড, চেরাগআলী, বোর্ড বাজার, মালেকের বাড়ী, চান্দনা চৌরাস্তা, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর ও শ্রীপুরের মাওনা বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষ।

তাদের অধিকাংশরই গন্তব্য ছিল ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল।

এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন কারণে ঈদের আগে বাড়ি যেতে পারেননি। তাই ঈদের দিন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

সরাসরি কোনো গাড়ি না থাকায় গাড়ি বদল করে, কখনো বা পায়ে হেঁটেই যেতে হচ্ছে তাদের। তবে সব শ্রেণির যাত্রীকেই গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

আজও সড়কে যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রাইভেটকার, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখা গেছে।

স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে দুই সিটেই যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে স্থানীয় তাকওয়া পরিবহন। ভাড়াও নিয়েছে দ্বিগুণ।

বাসে জনপ্রতি ১০০ টাকা থেকে শুরু করে দূরত্ব ভেদে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে।

প্রাইভেটকারগুলোতে দূরত্ব ভেদে নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে ৩০০ টাকা এবং ময়মনসিংহ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে ৫০০ টাকা।

প্রাইভেটকার চালক আবুল কালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে মালিক গাড়ি বের করতে দেননি। তাই ইনকাম না থাকায় আমরাও বোনাস পাইনি। মালিকের সম্মতিতে আজ ঈদের দিন গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। যা পাব তা-ই আমাদের থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আবারও লকডাউন। আজকে যা ইনকাম করতে পারি তা দিয়েই কয়েকদিন বউ-বাচ্চা নিয়ে দুমুঠো খেতে পারব।’

ঈদের দিন অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও গ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) বলেন, ‘আজ সিরাজগঞ্জে গ্রামের বাড়ি গিয়ে আবার সন্ধ্যায় অথবা আগামীকাল গাজীপুরে ফিরে আসার ইচ্ছে আছে।’

পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া গ্রামে। তিনি জানান, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে এবং ঈদ উপহার দিতে তিনি আজ বাড়ি যাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, লকডাউনের কারণে বেশিরভাগ সময় দোকান বন্ধ ছিল। কয়েকদিন আগে মার্কেট খুলে দেওয়ায় ঈদের আগের রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়েছে। তাই, গ্রামে যাওয়ার সময় পাননি।

আজ দুপুরে তাকওয়া পরিবহনের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাওনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। যাত্রী পেলে এবং ভাড়ায় পোষালে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাওয়ার চিন্তা আছে।’

বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজ একটু বেশি ভাড়া নিলেও সড়ক ফাঁকা থাকায় দুই ঘণ্টার রাস্তা পৌনে এক ঘণ্টায় পৌঁছে যাব।’

রাজধানীর উত্তরায় একটি কসমেটিকসের দোকানে কাজ করেন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত দোকানে বেচাকেনা থাকায় বাড়িতে যেতে পারেননি। তাই আজ যাচ্ছেন।

গাড়িতে ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমস্যা নেই। অন্য দিনের চেয়ে আজকে আরামে এবং কম সময়ে বাড়ি যেতে পারব।’

জয়দেবপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কথা হয় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে। স্ত্রী ও সন্তান তিনি বাড়ি যাচ্ছেন ঈদ করতে। তিনি বলেন, ‘বছরের এই একটি দিনের জন্য সবাই অপেক্ষা করে। হাজারো কষ্ট সামলে সবাই গ্রামের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিবহন সমস্যা ও যানজটের কারণে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঈদের আগে বাড়ি যাওয়ার সাহস পাইনি। তাই, আজ ঈদের দিন সড়ক ফাঁকা থাকায় বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছি।’

Comments

The Daily Star  | English

UK agency freezes London properties owned by Salman F Rahman’s son

Sheikh Rehana, the sister of Sheikh Hasina and mother of former UK City minister Tulip Siddiq, has lived at the Gresham Gardens property

42m ago