মৌলভীবাজারে ঝুঁকি নিয়ে ঘোরাঘুরি
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনায় সারাদেশের পর্যটন কেন্দ্রের মতো মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক ও বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধেও পর্যটকের প্রবেশ ও ঘোরাঘুরি নিষেধ ছিল। কিন্তু, ঈদের ছুটিতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে যেতে না পারলেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে উদ্যানের সামনের কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক আর মাধবপুর চা-বাগান লেকসহ বিভিন্ন বাগানের লেক ও প্ল্যান্টেশন এলাকায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
আগত পর্যটকরা মানেননি কোনো স্বাস্থ্যবিধি। ফলে মাধবপুর লেক এলাকায় গতকাল দুপুরের পর থেকে আজ পর্যন্ত মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা নিয়ে আসা মানুষের অবাধ ঘোরাঘুরি ছিল। একই অবস্থা ধলই চা-বাগানে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ এলাকা, শমশেরনগর চা-বাগানের লেক, শমশেরনগর চা-বাগান গলফ মাঠ, ফুলবাড়ি চা-বাগানসহ বিভিন্ন চা-বাগানের পাহাড়ি উঁচু-নিচু এলাকায়।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উদ্যানের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ থাকায় ও নিরাপত্তাকর্মীদের সতর্কতায় কোনো পর্যটক ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তবে, বিভিন্ন স্থান থেকে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত কার, মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে আসা পর্যটকরা উদ্যানের বাইরে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের পাহাড়ি এলাকায় ঘোরাঘুরি করে ছবি তুলেন। এসব পর্যটকরা পরবর্তীতে মাধবপুর লেকে গিয়ে ভিড় করেন।
মাধবপুর চা-বাগান লেক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঘুরতে যাওয়া প্রায় ৮০ শতাংশের মুখে ছিল না কোনো মাস্ক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন তারা সন্তানদের নিয়ে অনেকটা গৃহবন্দি ছিলেন। ঈদের ছুটিতে সন্তানদের অনুরোধেই পরিবার সদস্যদের নিয়ে মাধবপুর লেকে বেড়াতে এসেছেন।
মাধবপুর লেকের পাহারাদার লক্ষ্মী নারায়ণ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ সময়ে লেকে প্রবেশ নিষেধ বলে আগত পর্যটকদের প্রবেশে বাঁধা দিয়ে আমি একা তাদের আটকাতে পারছি না।’
তবে, মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি কমলগঞ্জ থানার ওসিকে অনুরোধ করে ঈদের দিন কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে এনেছিলাম মাধবপুর লেক এলাকায়। যাতে পুলিশ তাদের সেখানকার ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আজকেও সেখানে ভিড়।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অসংখ্য আগত পর্যটক উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের বেশ কিছু এলাকায় ঘোরাঘুরি করেছেন। আর পরবর্তীতে এসব পর্যটকরা আবার মাধবপুর লেকে গিয়ে ভিড় করছেন।’
Comments