ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুরির অপবাদে কিশোরকে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মিরাসানী গ্রামে চুরির অপবাদে এক কিশোরকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে কিশোরকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
নির্যাতনের শিকার কিশোর ইয়াকুব উপজেলার মিরাসানী গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর সে তার নানীর সঙ্গে থাকে। তার মা কাজের সুবাদে সৌদি আরবে থাকেন।
মামলা ও তিনজন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নির্যাতিত কিশোরের নানী আরজু বেগম বাদী হয়ে থানায় সাত জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেছেন। এর মধ্যে এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: মিরাসানী গ্রামের মৃত ধন মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৪৫), একই গ্রামের পিন্টু মিয়ার ছেলে মান্নান (২৩) ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাহিন প্রকাশ মান্না (২১)।
মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার ঈদের দিন মিরাসানী গ্রামের ইরন মিয়ার বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। কিশোর ইয়াকুব ফোনটি চুরি করেছে সন্দেহে পরদিন শনিবার তাকে নানীর বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় ইরন মিয়ার শ্যালক একই গ্রামের আব্দুল আলীম মিয়ার ছেলে রুবেল।
পরে ইরন মিয়ার ঘরে নিয়ে মোবাইল চুরির অপবাদে রুবেলসহ বাবু, মান্না ও আরও কয়েকজন মিলে ইয়াকুবের হাত-পা চেয়ারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
ইয়াকুবের কান্নার শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন তার নানীর বাড়িতে সংবাদ দেয়। এরপর তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন গতকাল রোববার ওই কিশোরকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক মিলে কিশোরটিকে বেধড়ক পেটাচ্ছে। এ সময় সে ’বাবাগো’, ‘বাবাগো’ করে চিৎকার করলেও কেউ কর্ণপাত করেনি।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা কিশোর ইয়াকুব ডেইলি স্টারকে বলে, ‘হেরা আমারে চেয়ারের লগে বাইন্ধা মারছে। কারেন্টের শটও (ইলেকট্রিক শক) দিছে। আমার নানী না আইলে আমারে মাইরা লাইতো।’
Comments