পড়াশোনা পছন্দ করতেন না মেসি
বাংলাদেশে, বিশেষ করে, সামাজিক মাধ্যমে একটা ট্রল প্রায়ই দেখা যায়, লিওনেল মেসিও যদি বাংলাদেশি হতেন, তাহলে পড়াশোনার চাপে এতদূর আগাতে পারতেন না। মাঠে নয়, বাবা-মায়ের চাপে বিসিএস নিয়েই দৌড়াতে হতো তাকে। আসলেই কি তা? কারণ, পড়াশোনার এ ব্যাপারটাই যে পছন্দ করতেন না তিনি!
সম্প্রতি আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম দিয়ারিও ওলের কাছে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কোনো রাখঢাক না রেখে এমনটাই বলেছেন মেসি, 'ছাত্র হিসাবে আমি কেমন ছিলাম? আমি পড়াশোনা পছন্দ করতাম না এবং এটা আমার জন্য কঠিন ছিল, তবে আমি ভালো ব্যবহার করেছিলাম।'
এমন নয় যে অভাব ছিল সংসারে। বিলাসী জীবন কাটাতে না পারলেও নিজের পরিবারে কখনো কোনো কিছুর অভাব দেখেননি তিনি, 'আমার কোনো কিছুর অভাব হয়নি। কারণ আমার বাবা সারা দিন কাজ করতেন এবং সম্ভবত আমাদের কোনো কিছুর অভাব যাতে না হয় তা নিশ্চিত করার জন্যই তিনি সেখানে (পরিবারের সঙ্গে) ছিলেন না। তিনি অনেক বেশি কাজ করতেন এবং অতিরিক্ত সময়েও কাজ করতেন।'
পড়াশোনা পছন্দ না করলেও ফুটবল অনেক বেশি পছন্দ করতেন মেসি। দিনের বেশিরভাগ সময় মাঠেই থাকতেন বার্সা অধিনায়ক, '৪-৫ বছর বয়সের আগেও আমি বল নিয়ে খেলতাম। ঠিক যখন থেকে হাঁটতে শিখেছি। মনে আছে প্রথম ম্যাচটা ছিল গ্রান্দোল্লিতে (রোজারিও)। আমার চেয়ে বয়সে বড় কাজিনরা ছিল। সবাই একত্র হলেই খেলতে নামতাম। প্রথম কবে বল নিয়ে খেলেছি, তা মনে পড়ছে না। তবে এটা ঠিক খুব অল্প বয়স থেকেই খেলা শুরু করি। ৪ বছর বয়সে খেলা শুরু করেছি ক্লাবে, রাস্তায়—সব সময় শুধু খেলেছি।'
তবে দাদীর ইচ্ছার কারণে পেশাদার ফুটবলার হতে পেরেছেন মেসি, 'আমাদের এক কাজিন (ফুটবল) খেলত। ভিন্ন বয়সের হওয়ায় আমরা প্রায় প্রতিদিনই সেখানে যেতাম। একবার ৮৬ সালে জন্ম নেওয়া কিছু ছেলে খেলছিল। অর্থাৎ আমার চেয়ে এক বছরের বড় আরকি। তাদের একজন খেলোয়াড়ের প্রয়োজন ছিল —আমার দাদি কোচকে বললেন 'ওকে নিয়ে নিন।' না, আমি কীভাবে তাকে দলে নেব, সে কত ছোট দেখেছেন! আঘাত পাবে—কোচ বলেছিলেন। কিন্তু দাদি অনড়—অনবরত বলছিলেন 'নিয়ে নিন, নিয়ে নিন।'
পরে তাকে বুট কিনে দেওয়ার চাপ দেন তার দাদী, 'ওকে ফুটবল বুট কিনে দাও। আগামী সপ্তাহ থেকে ওকে অনুশীলনে নিয়ে যাব। এরপরই সব শুরু হলো। সময়টা অসাধারণ ছিল।'
এরপরের গল্প কম বেশি সবারই জানা। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তিনি। ক্যারিয়ার শেষে হয়তো নিজেকে আরও উঁচুতে তুলে ধরবেন এ তারকা।
Comments