নাগরিক সমাবেশ

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল ও রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল ও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'নাগরিক সমাজের' ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল ও এই আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ৷ একইসঙ্গে রোজিনা ইসলামকে নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিও জানানো হয়েছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'নাগরিক সমাজ' এর ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব দাবি জানান।

এছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবকে অপসারণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, 'মন্ত্রীরা বলেছেন রোজিনা ইসলামের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনের কোনো এদিক সেদিক হবে না৷ তার মানে কী? আগে আইনের এদিকে সেদিক হতো?’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন যে, তাদের কাছে একটি বিশেষ ভিডিও ক্লিপ আছে, সেটি আদালতে দেখাতে এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন৷ ওই ভিডিও ক্লিপ দেখানোর পর  রোজিনার জামিনের ব্যাপারে যেন রায় দেওয়া হয়৷ আমার কাছে খুবই অবাক লাগে যে, বালিশকাণ্ড, হাসপাতালে দুর্নীতি কাণ্ডসহ দুর্নীতির এতো এতো কাণ্ড সেগুলোর বিষয়ে কোনো ভিডিও ক্লিপ নেই৷ আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই রোজিনা ইসলামকে জেলে আটকে রাখা যাবে না৷' 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, 'সাংবাদিক রোজিনা ও তার সহকর্মীরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী অফিসে না যাওয়া নিয়ে পত্রিকাতে রিপোর্ট করেছিলেন৷ এখানে অন্যায়কারী, দুর্নীতিবাজ-অনিয়মকারী, দায়িত্বহীন পক্ষ আর সত্য অনুসন্ধানী পক্ষ রয়েছে৷ সাংবাদিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার তথ্য গোপনীয়তার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ রোজিনার বিরুদ্ধে এতো বড় অন্যায়ের পরে আবার তার চরিত্র হননের পাঁয়তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখছি৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনগণের টাকা দিয়ে রোজিনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালো সে বিচারও কি আমরা পাবো?

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, 'স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলারা ঘটনার প্রথমে সাংবাদিক রোজিনার সঙ্গে শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে যে আচরণ করেছে তার জন্য আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো৷ কিন্তু আমরা অবাক হয়েছি সরকার এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট আমলাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ 

দেশে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকার না থাকায় আজকে সাংবাদিকরা নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ছাড়া এসব নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না৷ এভাবে চলতে থাকলে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।’

আইনজীবী হাসনাত কাইয়্যুম বলেন, 'রোজিনাকে হেনস্তার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত তার জামিন দেওয়া হয়নি৷ যেটি পাওয়া তার অধিকার৷ এরকম লেখক মুশতাকেরও জামিন হয়নি৷ পরে কারাগারে তার মৃত্যু হয়েছে৷ ব্রিটিশ আমলের আইনে রোজিনারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ যে আইন পাকিস্তান আমলেও বহাল ছিল৷ যেটি স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বহাল আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

21m ago