লা লিগা চ্যাম্পিয়ন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ

ছবি: সংগৃহীত

যেভাবে মৌসুমটা শুরু করেছিল অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ, তাতে মনে হয়েছিল বেশ কিছু ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন হবে দলটি। কিন্তু সময় যতো গড়িয়েছে উত্থান-পতনে এক সময় কঠিন হয়ে যায় তাদের সমীকরণ। অপেক্ষা করতে হয় আসরের শেষ রাউন্ড পর্যন্ত। তাতেও যেন নাটক থামছিল না। রিয়াল ভায়াদলিদের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়ে দলটি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। শেষ পর্যন্ত লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে দিয়েগো সিমিওনির শিষ্যরা।

শনিবার ভায়াদলিদের মাঠে স্বাগতিকদের ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে অ্যাতলেতিকো। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে অস্কার প্লানোর গোলে এগিয়ে যায় ভায়াদলিদ। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে এগিয়ে যায় অ্যাতলেতিকো। আনহেল কোরেয়া দলকে সমতায় ফেরানোর পর লুইস সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় তারা।

৩৮ ম্যাচ শেষে ২৬ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো অ্যাতলেতিকো। সমান সংখ্যক ম্যাচে ২৫ জয় ও ৯ ড্রয়ে ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে আরেক জায়ান্ট দল বার্সেলোনা।

অ্যাতলেতিকোর ম্যানেজার হিসেবে এটা সিমিওনির দ্বিতীয় লা লিগা শিরোপা। সবমিলিয়ে নয়টি। সবশেষ ২০১৩-১৪ সালে সিমিওনির অধীনে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অ্যাতলেতিকো। তবে স্প্যানিশ লিগে এটা একাদশ শিরোপা মাদ্রিদের দলটির।

শেষ দিনে মূলত লড়াইটা ছিল দুই মাদ্রিদের মধ্যে। ২ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে ম্যাচ শুরু করে অ্যাতলেতিকো। তার উপর প্রতিপক্ষও কিছুটা দুর্বল, ভায়াদলিদ। যে দলটির মালিক রিয়াল মাদ্রিদে দীর্ঘদিন খেলা রোনালদো নাজারিও। সাবেক ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করতে এদিনও যেন বড় ভূমিকা পালন করতে হতো এ ব্রাজিলিয়ানের। শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

কিছুটা দুর্বল দল হলেও অবনমন এড়াতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় মরণ কামড় দিতে মুখিয়ে ছিল ভায়াদলিদ। প্রায় সমান তালেই লড়াই করে দলটি। প্রতিপক্ষ ১৪টি নিলেও কম যায়নি তারা। ১০টি শট নেয় তারাও। যার ৪টি ছিল লক্ষ্যে। প্রথমার্ধে গোল পেয়ে গিয়েও গিয়েছিল তারা।  কিন্তু শেষ রক্ষা করতে না পাড়ায় আগামী মৌসুমে আর লা লিগায় খেলা হচ্ছে না তাদের। তাদের সঙ্গী হয়েছে হুয়েস্কাও। যদিও এদিন জিতলেই লা লিগায় টিকে যেত দলটি। ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে সুযোগ নষ্ট করে তারা। অ্যাথলেতিক বিলবাওকে হারিয়ে তাই লা লিগায় টিকে যায় এলচে। আর আগেই অবনমন নিশ্চিত ছিল এইবারের।

অন্যদিকে রিয়ালের প্রতিপক্ষ ইউরোপা লিগের ফাইনালিস্ট ভিয়ারিয়াল। তারপরও শেষ পর্যন্ত লড়াইও চালিয়ে যায় তারা। জয়ও ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু অ্যাতলেতিকোর জয়ে শিরোপা ধরে রাখার সব আশা শেষ হয়ে যায় তাদের।

দুই দলের ম্যাচে অবশ্য অনেকটাই মিল ছিল। ম্যাচের ১৮তম মিনিটেই যখন অ্যাতলেতিকো পিছিয়ে পড়ে, তার দুই মিনিট পর পিছিয়ে পড়ে রিয়ালও। ৫৫তম মিনিটে আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়াম থেকে খবর আসে সমতায় ফিরেছে রিয়াল। তাতে যেন তেতে ওঠে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। আবারও সেই দুই মিনিটের ব্যবধান। সমতায় ফেরে অ্যাতলেতিকো। পরে অবশ্য রিয়ালের গোল ভিএআরে না টিকলেও টিকে যায় অ্যাতলেতিকোর। আর দুই দলের ফলাফলও একই।

এদিন ম্যাচের ১৮তম মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে মার্কোস দি সৌসার নিখুঁত থ্রু পাসে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বল নিয়ন্ত্রণ করে দারুণ এক শটে ভায়াদলিদকে এগিয়ে দিয়েছিলেন প্লানো। ৫৭তম মিনিটে জানিক কারাস্কোর কাছ থেকে বল পেয়ে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে গড়ানো শটে বল জালে জড়িয়ে সমতা ফেরান কোরেয়া। ১০ মিনিট পর অবশ্য অ্যাতলেতিকোকে গোল উপহার দেয় ভায়াদলিদ। সতীর্থকে পাস দিয়ে গিয়ে ফাঁকায় সুয়ারেজের পায়ে বল তুলে দেন সের্জি গার্দিওলা। বল ধরে এগিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে কোনো ভুল হয়নি এ উরুগুইয়ানের।

Comments

The Daily Star  | English

What are the five charges against Hasina at ICT?

Former home minister Kamal and ex-IGP Mamun have also been accused

17m ago