সংসদ সদস্য শিমুলের ভাগ্নের হাতে পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী লাঞ্ছিত

নাফিউল ইসলাম অন্তর। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের ভাগ্নে এবং সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নাফিউল ইসলাম অন্তরের বিরুদ্ধে।

নাফিউল ইসলাম অন্তরের বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঠিকাদার এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার বিকেলে ঠিকাদারি কাজের মান নিয়ে মীর আমিরুল ইসলাম জাহানের সঙ্গে কথা বলায় প্রকৌশলীর ওপর চড়াও হয় আমিরুল ইসলামের ছেলে এবং নাটোর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল ইসলাম অন্তর।

এ সময় প্রকৌশলী আবু রায়হানকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন নাফিউল ইসলাম অন্তর। এতে প্রকৌশলী আবু রায়হানের ঠোঁট কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। পরে তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল রাতে নাফিউলকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা এবং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করেন প্রকৌশলী আবু রায়হান।

নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভবনের টাইলস লাগানোর কাজ করছেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম জাহান। সেখানে শিডিউল মোতাবেক মানের টাইলস লাগাতে বললে ঠিকাদার তাতে অস্বীকৃতি জানায়। গতকাল এসব বিষয়ে অফিসে এসে কথা বলতে চায় ঠিকাদার। এ সময় অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করতে থাকেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘গালিগালাজ না করে ভদ্রভাবে কথা বললে ঠিকাদারের ছেলে নাফিউল ইসলাম অন্তর উত্তেজিত হয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমার ঠোঁট কেটে যায় এবং হাত, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাফিউল ইসলাম অন্তরের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টার একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

নাফিউল ইসলাম অন্তরের বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডে টেন্ডার নিয়ে অনেকে সমস্যা করত। এর থেকে বাঁচার জন্য তারাই আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। সে যাওয়ার পর থেকে আর কোনো সমস্যা হয়নি। আমার ছেলেকে তারা বিভিন্ন সময় কাজ দেওয়ার কথা বলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজসে অন্যদের কাজ দিয়ে দিয়েছে। গতকালও কাজের কথা নিয়েই এক পর্যায়ে বাকবিতান্ড ও ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী ও আমার ছেলে দুজনই চেয়ার থেকে পরে যায়। সেখানে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি কাজে বাধা প্রদান, মারধর ও হত্যার হুমকির কথা উল্লেখ করে প্রকৌশলী আবু রায়হান মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’

Comments

The Daily Star  | English

Produce 10 ex-ministers, 2 advisers to Hasina before tribunal on Nov 18: ICT

They will be shown arrested in case filed over crimes against humanity, genocide, says prosecutor

27m ago