পটুয়াখালীতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২১ গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার আগেই পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে কমপক্ষে ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উঁচু জোয়ারে আজ বেড়িবাঁধ দিয়ে ঢুকে পড়া পানিতে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।
সকালে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ছয় কিলোমিটার অরক্ষিত বেড়িবাঁধ এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার চরআন্ডা, দক্ষিণ চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০ কিলোমিটার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে। বেড়িবাঁধের বাইরের কয়েকটি গ্রামও প্লাবিত হয়েছে।
জোয়ারের সময় পটুয়াখালীতে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
স্থানীয়রা জানান, কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের পশুড়িবুনিয়া, এগারো নম্বর হাওলা, ধনজুপাড়া, চৌধুরী পাড়া, নাওয়া পাড়া, ছোট পাঁচ নং, বড় পাঁচ নং ও মুন্সী পাড়া গ্রাম ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুই-তিন ফুট স্ফীত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
এদিকে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা, নয়াচর, উত্তর চরমোন্তাজ, চরবেষ্টিন, মোল্লা গ্রাম, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরনজির, কোড়ালীয়া, কাউখালীচর, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মরাজাঙ্গী, চিনাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গোলবুনিয়া, চরলতা প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০০ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন।
কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান, ওই ইউনিয়নের ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন জায়গা আগে থেকেই ভাঙা ছিল। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে এখানে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জানান, চালিতাবুনিয়া মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি এলাকা। এখানে বেড়িবাঁধ খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় জোয়ারের পানিতে ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন।
চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া জানান, চরআন্ডার বেড়িবাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে নাজুক। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলেই লোকালয় তলিয়ে যায়। বাড়তি জোয়ারের পানির চাপে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা ও দক্ষিণ চরমোন্তাজ বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। অনেক মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বাতাস ও জোয়ারের পানির চাপে কুয়াকাটা সৈকতের ঝিনুক ও শুটকির প্রায় ৪০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ইয়াস’র শক্তি আম্পানের চেয়ে বেশি, উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাতের সম্ভাবনা
Comments