বরগুনায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত

বরগুনার সদর উপজেলার বাইনচটকি গ্রামে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন/ স্টার

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে বরগুনার নদ-নদীতে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। স্বল্প উচ্চতার বেড়িবাঁধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ও নাজুক বাঁধের কারণে এসব এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এছাড়া ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারে বরগুনার বাইনচটকি, বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে বরগুনার পশ্চিম গুলবুনিয়া, বড়ইতলা এবং ঢালভাঙা এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার নদীর তীরবর্তী লোকালয় তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। ভেসে গেছে এসব এলাকার বেশ কিছু পুকুরের মাছ। তবে ক্ষয়ক্ষতির তাৎক্ষণিক বিবরণ জানাতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পাথরঘাটা উপজেলার পূর্ব রুপধন এলাকার বাসিন্দা মো. শামসুল হক বলেন, এই এলাকায় জোয়ারের চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে তার বসবাসের ঘরটিও ধসে গেছে।

বড়ইতলা এলাকার বাসিন্দা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের এই এলাকায় বাঁধ বলতে কিছু নেই। উঁচু জোয়ার হলে আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার হাজারো মানুষের ঘরে আজ রান্না হবে না বলেও জানান তিনি।

পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা গ্রামের বাসিন্দা হিরা বলেন, বরগুনা জেলার মধ্যে সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে পদ্মা এলাকা। এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। জিও ব্যাগ দিয়ে এখানে নদীর পানির প্রবাহ প্রতিহত করা চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তা কোনো কাজে আসছে না। এখান থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ফসলের মাঠসহ পুকুর ও মাছের ঘের।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বরগুনা জেলায় ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এসব পোল্ডারের ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মো. মাহতাব হোসেন বলেন, বরগুনার নদ-নদীতে আজ ৩ দশমিক ৩২ মিটার উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপরে।

এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইসার আলম বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৯ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। স্ফীত জোয়ারের কারণে এসব বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।

আরও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে ২১ গ্রাম প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ইয়াস’র শক্তি আম্পানের চেয়ে বেশি, উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাতের সম্ভাবনা

আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভাসানচরের রোহিঙ্গারা

Comments

The Daily Star  | English

Govt yet to receive any letter from Tulip: Shafiqul

Tulip has written to Yunus as she wants to meet him in London to clear up a "misunderstanding" after corruption allegations made by the interim govt led her to resign from the UK government

17m ago