ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ২ বন্ধুকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে শাহবাগ থানা পুলিশ। গত ১৫ মে নিখোঁজ হওয়ার আগে হাফিজুর কার্জন হলে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিয়েছিলেন। সেদিন সন্ধ্যায় কার্জন হলের রসায়ন বিভাগের করিডোরে আড্ডায় হাফিজুরের সঙ্গে ২০১২-১৩ সেশনের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ বাপ্পী ও ঢাকা কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী রাফসানসহ আরও কয়েকজন ছিলেন।
এ ঘটনায় আসিফ বাপ্পী ও রাফসানকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাত ৯টায় এ দুজন শাহবাগ থানায় যাওয়ার পরে ১০টার দিকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন অর রশীদ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সড়ে ছয়টায় মামুন অর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাফিজুরের দুজন বন্ধু থানায় আছেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে৷ এ তথ্যগুলো তদন্তের কাজকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে৷’
তিনি আরও বলেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর হাফিজুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে৷
বন্ধুরা জানান, গত ১৫ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাফিজুর রহমান কার্জন হলে বসে আড্ডা দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলছে, রাত ৮টার দিকে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ডাব বিক্রেতার দা দিয়ে ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টা করেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
শাহবাগ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ: ১৫ মে কী ঘটেছিল
গত ১৫ মে ঈদের পরদিন বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফেরেন হাফিজুর। ঢাকায় আসার কারণ হিসেবে তার ছোটভাই সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হাফিজুর তার বন্ধুদের সঙ্গে ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ঈদের পর দিন ক্যাম্পাসে আসেন। ওই দিন রাতে কার্জন হল এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছিলেন তিনি।
হাফিজুরের বন্ধুদের বরাতে জানা গেছে, সেদিন সন্ধ্যায় কার্জন হলের রসায়ন বিভাগের কোরিডোরে আড্ডায় হাফিজুরের সঙ্গে বাপ্পী ও রাফসানসহ আরও কয়েকজন ছিলেন।
আসিফ বাপ্পী ঢাবির ২০১২-১৩ সেশনের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী, রাফসান ঢাকা কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী।
সোমবার ৯টায় রাফসান ও বাপ্পী শাহবাগ থানায় যান। সেসময় দ্য ডেইলি স্টারের এই প্রতিবেদকও থানায় গিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর আগে শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) কামরুজ্জামানের রুমে বসে ছিলেন। এই প্রতিবেদক কামরুজ্জামানকে জিজ্ঞেস করেন তাদের সঙ্গে কথা বলা যাবে কিনা। তিনি সম্মতি দেওয়ার পর তাদের সঙ্গে কথা হয়।
রাফসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ২২ মে তিনি ও বাপ্পী রাঙ্গামাটি ঘুরতে গিয়েছিলেন। পরদিন, ২৩ মে সন্ধ্যায় তারা ঢামেক মর্গে হাফিজুরের মরদেহ পাওয়ার খবর জানতে পারেন। এ তথ্য শুনে তারা মোটরসাইকেলযোগে সন্ধ্যার দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছান। পরে রাত ৯টায় তারা শাহবাগ থানায় যান।
রাত ১০টার দিকে বাপ্পীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উর রশীদের রুমে ডেকে নেওয়া হয়। তখনও কামরুজ্জামানের কক্ষে বসে রাফসানের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ১৫ মে সন্ধ্যা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তিনি কার্জনে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাফিজুর আসে। তার আচরণ সেদিন অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল।
কী ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন, অস্বাভাবিক আচরণের পেছনে কোনো কারণ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নের উত্তর দেননি। এ পর্যায়ে পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন) কামরুজ্জামান তাকে ডেকে নিলে আর কথা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর ঘণ্টাখানেক পর সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমানের রুমে রাফসানকে দেখা যায়। সেখানে গিয়ে প্রতিবেদক তার সঙ্গে কথা বলা শুরু করা মাত্রই কামরুজ্জামান আবারও রাফসানকে ডেকে অন্য রুমে নিয়ে যান।
কামরুজ্জামান জানান, রাফসান খাবার খেতে চেয়েছেন। তাই তিনি তাকে খাবার খেতে ডেকেছেন। এরপরই রাফসানকে ওসির রুমে ডেকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। বাপ্পী সেখানে আগে থেকেই ছিলেন।
সোমরাত দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত থানায় অপেক্ষা করেও তাদের সঙ্গে আর দেখা পাওয়া যায়নি।
থানায় উপস্থিত হাফিজুরের অন্য বন্ধুরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, কার্জন হলের প্রাঙ্গনেই হাফিজুর তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা দিতেন। সেদিন বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর তিনি এদিক সেদিন ছুটোছুটি করছিলেন। তাকে বন্ধুরা আটকাতে চেষ্টা করে। তিনি তখন ফোন ও মানিব্যাগ বন্ধুদের কাছে রেখে বৃষ্টির মধ্যে বের হয়ে যান। তবে রাফসান ও বাপ্পী এই বিষয়টি নিয়ে থানায় দ্য ডেইলি স্টারকে জানাননি।
বাপ্পী ও রাফসানকে আটক করা হবে কিনা জানতে চাইলে সোমবার রাতে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তদন্ত চলছে। বাপ্পী ও রাফসানকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বলতে পারব তাদেরকে আটক করা হবে কিনা।’
১৫ তারিখের ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য
শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন) কামরুজ্জামান বলেন, ১৫ তারিখ আটটার কিছু সময় পরে তার কাছে ফোন আসে। তিনি মেডিকেলে গিয়ে জানতে পারেন ওই এলাকায় এক যুবক ডাববিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ডাবওয়ালার বক্তব্যের ভিডিও দেখান।
ভিডিওটিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগের সামনে ভ্রাম্যমাণ ডাবের দোকানের বিক্রেতা 'আত্মহত্যার’ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, দোকান থেকে দা নিয়ে সেটি দিয়ে নিজের গলায় কোপ দিচ্ছিলেন ২৩-২৪ বছরের এক যুবক৷ তার গলা থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছিল। কোপানোর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমাকে মাফ করে দাও, আমাকে মাফ করে দাও।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডাববিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। তিনি জানান, পুলিশকে তিনি বিবৃতি দিয়েছেন, সেখান থেকে যেন তথ্য সংগ্রহ করে নেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে রক্তাক্ত অবস্থায় ফুটপাথে বসে আছেন নির্লিপ্ত হাফিজুর। দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে একটি রিকশায় উঠিয়ে দেন। রিকশাচালককে বলেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে।
পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে আরও বলেন, তাকে দুবার রিকশায় ওঠানো হয়। তিনি বারবার নেমে যাচ্ছিলেন, চিকিৎসা না করানোর কথা বলছিলেন। কামরুজ্জামান তার মোবাইল ফোনে একটি ছবি প্রতিবেদককে দেখান। ছবিতে দেখা যায়, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তিনি স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন।
হাফিজ হয়তো যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন সেজন্য চিকিৎসার সুবিধার্থে হাত-পা বাধা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি আবারও বলেন, ‘হাফিজ চিকিৎসা নিতে চাইছিলেন না।’
সেদিন হাফিজকে মেডিকেলে নেওয়ার পর ডাব বিক্রেতা ওই রক্ত মাখা দা টি ধুয়ে ফেলেন। পরে শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান গিয়ে সেটি সংগ্রহ করেছেন। সেদিন থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাফিজুরের সুরতহালের রিপোর্টে উল্লেখ আছে, হাফিজুরের মৃত্যু ধারালো অস্ত্র দ্বারা কাটা জখমের কারণে হয়েছে৷ এছাড়াও ডান হাতের বাহুর নিচে পাশাপাশি দুটি জখম এবং পেটের নিচে একটি জখম রয়েছে৷ ডান হাতের কনুইতে এবং বাম পায়ের হাঁটুতে এবং হাঁটুর নিচে জখম আছে৷
কসবা থানায় জিডি
হাফিজুরের বন্ধুদের বরাতে জানা গেছে, হাফিজুর নিখোঁজ থাকায় তারা ২০ মে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেসময় জিডি করতে আসাদের উদ্দেশে পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেছিলেন, হাফিজুরের বৈধ অভিভাবক কেউ জিডি করলে ভালো। পরদিন হাফিজুরের পরিবারের সদস্যরা কসবা থানায় জিডি করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় একটি জিডি হওয়ায় শাহবাগ থানায় হাফিজুরের নিখোঁজের ঘটনায় কোনো জিডি নেওয়া হয়নি৷ কারণ ইতোমধ্যে একটি জিডি নেওয়া হয়ে গেছে৷’
মরদেহ আট দিন মর্গে পড়ে ছিল
তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রায়ই টিএসসি প্রাঙ্গনে তাকে গিটার হাতে গান গাইতে দেখা যেত।
মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাফিজুরের এক বন্ধু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘১৫ মে ২৩-২৪ বছরের এক যুবককের অপমৃত্যু নিয়ে পুলিশের কাছে তথ্য ছিল। এই এলাকায় তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল, বুয়েট। অথচ তারা একবারও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আট দিন ধরে এক জন ঢাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ মর্গে পড়ে ছিল অথচ প্রশাসন, পুলিশ কেউই কিছু জানে না।’
এ প্রসঙ্গে পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা তো ভাবতেই পারিনি উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পারেন! তার পরনে কোনো পোশাক ছিল না। তাকে উন্মাদের মতো দেখাচ্ছিল। ঢাকা মেডিকেলে গোটা ঢাকা শহরের সবাই চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পারেন এটা তাকে দেখে আমাদের মনেই হয়নি। ২০ তারিখে থানায় এসে উনারা যে বর্ণনা দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এক জন মূকাভিনেতা, গিটার বাজিয়ে গান করেন সেই বর্ণনার সাথে সেদিনকার যুবকের কোনো মিলই নেই।’
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশীদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাফিজুরের সঙ্গে কোনো আইডি কার্ড, ম্যানিব্যাগ কিছু ছিল না৷ যে কারণে আমরা তার পরিচয় জানতে পারিনি৷ অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে তাকে মর্গে রাখা হয়েছে৷ হাফিজুর নিখোঁজ হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের জানায়৷ তখন আমরা সারা দেশে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি৷’
গুরুত্বপূর্ণ সিসিটিভি ফুটেজ
কার্জন হল, ঢাকা মেডিকেল ও শহীদ মিনার এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে সবকয়টি জায়গায়ই সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। রসায়ন বিভাগের কোরিডোর যেখানে ১৫ মে হাফিজ আড্ডা দিচ্ছিলেন সেখানেও একটি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে।
সোমবার শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমানের কাছে এ ঘটনার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ইন-অ্যাকটিভ।’
কার্জন হলের সিসিটিভি ফুটেজ সক্রিয় আছে কিনা জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা হাফিজের পরিবার কোনো মামলা করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে মামলা করবে কিনা জানতে চাইলে গোলাম রাব্বনি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহাকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘অতিদ্রুত তদন্ত শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।’
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি যোগাযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের মতো করে তদন্ত করবে, রিপোর্ট জমা দেবে। সে অনুযায়ী, পুলিশের সঙ্গে প্রয়োজনে সমন্বয় করা হবে।
ঢাবি প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে গাফলতির অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুতে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ভিত্তিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত ওই মানববন্ধনে হাফিজের মৃত্যু ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাহবাগ থানার পুলিশের গাফলতি ছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন তার সহপাঠীরা৷
মানববন্ধনে টিএসসি ভিত্তিক সংগঠন গবেষণা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক উদ্দীন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাফিজের মৃত্যুর পর যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাহবাগ থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে৷ কিন্তু এ ঘটনার শুরুতে উভয় পক্ষের গাফলতি ছিল৷ আমরা হাফিজ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানাই৷’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স বলেন, ‘আট দিন ধরে হাফিজুরের লাশ মর্গে পড়েছিল৷ তার নিখোঁজের ঘটনার জিডি পর্যন্ত নেয়নি শাহবাগ থানা৷ হাফিজের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ দায় এড়াতে পারে না৷ আমরা সঠিক তদন্তের দাবি করছি৷’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড একেএম গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফলতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি।’ একইসঙ্গে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি৷’
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন দ্য ডেইলি স্টারের ঢাবি সংবাদদাতা সিরাজুল ইসলাম রুবেল
আরও পড়ুন:
Comments