‘ইয়াস’ নামের অর্থ ও যেভাবে এই নামকরণ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় আঘাত হানার জন্য ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এত নাম থাকতে ঝড়টির নাম কেনো ইয়াস রাখা হলো?
Yaas-1.jpg

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় আঘাত হানার জন্য ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এত নাম থাকতে ঝড়টির নাম কেনো ইয়াস রাখা হলো?

আসলে বিষয়টি হলো, কোনো একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আগে ইচ্ছেমত নাম বেঁছে নেওয়া হয় না। বরং খুব সতর্কভাবে বাছাই করা হয় এসব নাম এবং প্রতিটি নামের মাধ্যমে দেওয়া হয় কিছু ইঙ্গিত। ইয়াসও এরকম একটি নাম।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কয়েক দিন আগে আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঝড়টির নাম ছিল ‘তাউতে’, যেটির নামকরণ করে মিয়ানমার। যার অর্থ টিকটিকি।

একইভাবে ২৬ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় আঘাত হানতে যাওয়া ঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইয়াস’। তবে, এই নামটির প্রস্তাব করেছে ওমান।

ফার্সি ভাষার শব্দ ইয়াস। ইংরেজিতে এর অর্থ ‘Jasmin’।

তবে, নামটি ভুলভাবে ‘ইয়স’ বা ‘ইয়াশ’ উচ্চারণ করা হয়।

কারা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে?

সাগরে বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোকে সেই অঞ্চলের রিজিওনাল স্পেশালাইজড মেটিওরোলোজিক্যাল সেন্টারগুলো (আরএসএমসি) এবং ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সেন্টারস (টিসিডব্লিউসি) মিলে নামকরণ করে থাকে।

উত্তর ভারত মহাসাগরের বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের জন্য ভারতের নয়াদিল্লির আরএসএমসি যথাযথ রীতি মেনে নাম ঠিক করে।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে গঠিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)/এসকাপ প্যানেল ২০০০ সালে ওমানের মাস্কাটে অনুষ্ঠিত ২৭তম অধিবেশনে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণের বিষয়ে একমত হয়।

সেখানে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর ২০০৪ সাল থেকে উত্তর ভারত মহাসাগরের সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ শুরু হয়।

বৈঠকে আটটি সদস্য দেশের প্রস্তাবিত নাম নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হয়। তালিকায় বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নাম প্রস্তাব করে।

নামকরণের পদ্ধতি কী?

সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়ে থাকে। যেমন, প্রস্তাবিত নামটি অবশ্যই কোনো রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও লিঙ্গ নিরপেক্ষ হতে হবে।

নামটি এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে, যাতে তা বিশ্বের কোনো জাতি-গোষ্ঠীর অনুভূতিতে আঘাত না দেয়।

আবার নামটি যেন প্রকৃতির প্রতি খুব বেশি রূঢ় বা নিষ্ঠুর না হয়।

নামটি হতে হবে সংক্ষিপ্ত, সহজে উচ্চারণযোগ্য ও কাউকে গালি দেওয়ার মতো নয় এমন।

নামটি সর্বোচ্চ আট অক্ষরের হতে হবে।

উচ্চারণসহ নামটির প্রস্তাব করতে হবে।

যদি ওপরের শর্তগুলোর মধ্য থেকে কোনোটি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্যানেল প্রস্তাবিত নামটি বাতিল করার ক্ষমতা রাখে।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

প্রতিটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের আলাদা নাম দেওয়া হয়। কোনো অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে পার্থক্য করতে এবং সচেতনতা সৃষ্টিতে নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নামকরণের ফলে সহজে ও দ্রুত ঝড়টি সম্পর্কে কোনো তথ্য মনে করা যায়। এ ছাড়া, নামকরণ করা হলে বেশি মানুষের মধ্য সচেতনতা সৃষ্টি করা যায়।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, ডিএনএ নিউজ ও দ্য ইকোনোমিক টাইমস।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago