বাঁধ নেই, কাজে আসছে না ১৪ কোটি টাকার রাবার ড্যাম

নদের দুই তীরে প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ না করায় সরকারের ১৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি কোনো কাজে আসছে না। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বিস্তীর্ন ফসলি জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনার জন্য জিঞ্জিরাম নদে একটি রাবার ড্যাম বসানো হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে। কিন্তু এটি কার্যকর করতে নদের দুই তীরে প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ না করায় সরকারের ১৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি কোনো কাজে আসছে না।

পাশাপাশি অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে জিঞ্জিরাম নদে ভাসমান ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের রাবার ড্যামটি।

স্থানীয় কৃষক সমিতির সদস্য ও এলাকার কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, রাবার ড্যামটি চালু না হওয়ার কারণে এখানখার শত শত কৃষক এখনও ডিজেলচালিত অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচের কাজ চালাচ্ছেন। ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে এলাকার পরিবেশগত ঝুঁকিও বাড়ছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের তালিকাভুক্ত ৫৪টি অভিন্ন নদীর একটি জিঞ্জিরাম। এই নদ ভারতের আসাম-মেঘালয় থেকে উৎপত্তি হয়ে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। 

নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে জিঞ্জিরাম নদে ভাসমান ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের রাবার ড্যামটি। ছবি: স্টার

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমান্তঘেঁষা যাদুরচর ইউনিয়নের খেওয়ারচর এলাকায় জিঞ্জিরাম নদে রাবার ড্যাম বসানোর প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের জুন মাসে। দুই দফায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ড্যামটি বসানোর কাজ শেষ হয়।

কিন্তু ড্যামটি চালু করার জন্য একই প্রকল্পের আওতায় লালকুড়া খেয়াঘাট থেকে খেওয়ারচর বাজার পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ ও সিসি ব্লক ফেলা এবং নদীর দুই তীরে বাঁধ নির্মাণকাজ অন্তর্ভুক্ত থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

খেওয়ারচর রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই রাবার ড্যাম প্রকল্পের আওতায় ৪০০ কৃষক সদস্য আছেন। কিন্তু এক যুগেও ড্যামটি চালু না হওয়ায় এলাকার প্রায় এত হাজার ২০০ কৃষক ডিজেল চালিত অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচকাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।’

রৌমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাহাদৎ হোসেনের ভাষ্য, রাবার ড্যামটি চালু হলে সেচ সুবিধার আওতায় আসবে এই এলাকার আড়াই হাজার কৃষক পরিবারের দুই হাজার হেক্টর আবাদি জমি। উপকৃত হবে এখানকার মৎস্যজীবী পরিবারগুলো।

সাহাদৎ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ড্যাম চালু হলে অগভীর নলকূপের ব্যবহার অনেকাংশে কমে যাবে। ফলে পরিবেশগত ঝুঁকিও কমে আসবে অনেকটা।’

রৌমারী উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেজবাহ আলমের মতে, রাবার ড্যামটি চালু করার জন্য প্রকল্প এলাকায় জিঞ্জিরাম নদের দুই তীরে অন্তত সাত কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা দরকার। তাহলেই এর সুফল পাবেন কৃষকরা।

মেজবাহ আলম বলেন, বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

1h ago