চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনে বিপদে আম ব্যবসায়ীরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন বাজার এলাকার আমের বাজারে ক্রেতা খুব কম, অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: রবিউল হাসান ডলার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাত দিনের লকডাউনের কারণে বিপদে পড়েছেন আম ব্যবসায়ীরা। গত সোমবার থেকে জেলার বাজারে গোপালভোগ আম বেচাকেনা শুরু হওয়ার ঠিক একদিন পর মঙ্গলবার থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।

আম বিক্রেতা ও আম চাষিদের বক্তব্য, লকডাউন ঘোষণার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। আর সে কারণে আম বিক্রি হচ্ছেনা। পাইকাররাও বাইরের জেলা থেকে আসতে পারছেন না।

এর মধ্যে গোপালভোগ আম পাকা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তারা জানান, এ আম বেশিদিন গাছে রাখা সম্ভব না। এ অবস্থায় কেনাবেচা না করতে পারলে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

তবে, জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, লকডাউন ঘোষণা করায় আম বিক্রিতে কোন বাধা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আম বিক্রি ছাড়াও ব্যবসায়ীরা জেলার বাইরে আম পরিবহন করতে পারবেন।

আজ বুধবার সকালে জেলা শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় আমের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমের ক্রেতা খুব কম। আম ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

শহরের মসজিদ পাড়ার জনি আলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ভোর ৫টায় পাঁচ মণ গোপালভোগ আম নিয়ে বাজারে এসেছেন। আম বিক্রি দূরের কথা, কেউ দামও জিজ্ঞেস করছে না।

ক্রেতা না থাকায় সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত তিনি আম বিক্রি করতে পারেননি বলে জানালেন। লকডাউনের কারণে কেউ বাজারে আসছে না বলে দাবি করেন তিনি।

একই এলাকার আফজাল হোসেন বাজারে আট মণ গোপালভোগ আম নিয়ে এসেছেন। সালাম হোসেন নিয়ে এসেছেন ছয় মণ। তাদের আমও বিক্রি হয়নি বলে জানালেন।

তবে শহরের হুজরাপুরের আব্দূল কাইয়ুম পাঁচ মণ গোপালভোগ আম এনে দেড় মণ আম বিক্রি করতে পেরেছেন।

সদর উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামে মোহাম্মদ সাজু চার লাখ টাকা দিয়ে একটি বাগান লিজ নিয়েছেন। ওই বাগানে প্রায় ৩০০টি আম গাছ আছে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোপালভোগ আম পাকা শুরু হয়েছে। অন্য আমের মতো এই আম বেশিদিন গাছে রাখা সম্ভব নয়। দ্রুত সংগ্রহ করতে হবে।'

পুরাতন বাজার আম বাজারে তিনি আজ সকালে পাঁচ মণ আম নিয়ে গেলেও ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারেননি। এই আম বিক্রি করতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানালেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা মণ দরে। লকডাউন ঘোষণার কারণে বাজারে ক্রেতা না থাকায় আম বিক্রি হচ্ছে না। আর এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে খিরসাপাত আম। এ অবস্থায় কেনাবেচা না হলে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোপালভোগ আম খুব অল্প সময় থাকে, আর এক সপ্তাহ পর খিরসাপাত ও অন্যান্য আম বাজারে আসবে। লকডাউনে আম পাড়া ও বেচাকেনায় কোন প্রতিবন্ধকতা নাই। আম পরিবহনের কোন সমস্যা নেই। ব্যবসায়ীরা জেলার বাইরে আম নিয়ে যেতে পারবেন।'

তিনি বলেন, 'এ জেলার অর্থনীতি আম নির্ভর। জেলায় মোট ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান আছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। গত বছরও জেলায় এই পরিমাণ আম উৎপাদন হয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

42m ago