রৌমারীতে সড়ক নির্মাণ শেষ না করেই বিল উত্তোলন

দীর্ঘ চার বছরেও সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্ত এলাকায় নির্মাণাধীন রাস্তার সিংহভাগ কাজ শেষ না করেই বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দীর্ঘ চার বছরেও সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ। এর জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও এলজিইডি কর্মকর্তাদের অনিয়ম, গাফিলতি এবং অবহেলাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

রৌমারী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রৌমারী উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (বিলুপ্ত ছিটমহল) প্রকল্পের আওতায় কর্তিমারী জিসি থেকে বড়াইবাড়ী বিওপি ক্যাম্প পর্যন্ত দুই হাজার ৬৬৫ মিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ পায় ‘মেসার্স খায়রুল কবির রানা’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এর জন্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ৪২ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬৯ টাকা। কাজটি ২০১৮ সালের নভেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও, তা আজও শেষ হয়নি। 

নির্মাণাধীন ওই সড়কটির বেশির ভাগ অংশ খানাখন্দ, কাঁদামাটিতে ভরা। ছবি: স্টার

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ওই সড়কটির বেশির ভাগ অংশ খানাখন্দ, কাঁদামাটিতে ভরা। সড়কের কিছু অংশে ইটের খোয়া বিছানো হলেও করা হয়নি কার্পেটিংয়ের কাজ। এটা যে নির্মাণাধীন সড়ক দেখে তা বোঝার কোনো উপায় নেই।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের সময় বড়াইবাড়ী সীমান্তের অপদখলীয় ২২৬ একর জমি আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকায় স্বাধীনতার সুখ পেলেও রাস্তাঘাট না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ এলাকার মানুষকে। উন্নয়নবঞ্চিত বড়াইবাড়ি সীমান্তের মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য সেতু ও সড়ক বাবদ পাঁচ কোটি টাকার প্রকল্প হতে নেয় সরকার।

বড়াইবাড়ি এলাকার আনোয়ার হাসেন (৬৭) অভিযোগ করে বলেন, ‘রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ না করেই কর্মকর্তাদের সহায়তায় ঠিকাদার সব টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই এলজিইডি’র অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সব বিল তুলে নিয়ে ঠিকাদার এখন আর বাকি কাজ করছেন না।’

স্থানীয় কৃষক আতার আলী (৬৪) বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কৃষিপণ্য পরিবহণে বেশি খরচ হচ্ছে। অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’

এ ব্যাপারে ঠিকাদার খায়রুল কবির রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

রৌমারী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল জলিল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি এখানে যোগ দেওয়ার আগেই এই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন হয়েছে। পরে সরেজমিন দেখা গেছে, ওই প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত। তাই প্রকল্পের ৬৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার আটকে রাখা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই টাকা ছাড় দেওয়া হবে না। ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করতে সব ধরনের চেষ্টা করছি।’

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

7h ago