ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: কুয়াকাটা সৈকতের ৫০০ মিটার সাগরে বিলীন

ইয়াসের প্রভাবে কুয়াকাটা সৈকতের প্রায় ৫০০ মিটার সাগরে বিলীন হয়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পটুয়াখালী জেলার একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকতের প্রায় ৫০০ মিটার সাগরে বিলীন হয়েছে। স্ফীত জোয়ারে পটুয়াখালী জেলায় ৫৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কুয়াকাটায় জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশের সৈকতে গড়ে তোলা হোটেল কিংস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন

তিনি জানান, জেলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ লালুয়ার সাত কিলোমিটারসহ মোট ৫৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মেরামত করতে পাউবো'র ৫৩ কোটি টাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, 'জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোতে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে তিন কিলোমিটার নদীর তীর ভেঙেছে এবং নদী তীর সংরক্ষণ কাজের দেড় কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

জিরো পয়েন্ট এলাকার অন্তত ২০০টি অস্থায়ী দোকানপাট বিলীন হয়েছে। ছবি: সোহরাব হোসেন

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং বরাদ্দ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীর চর আন্ডা, চালিতাবুনিয়া, নয়ার চরসহ কয়েকটি চরে কোন বেড়িবাঁধ নেই। এছাড়াও  কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে রাবনাবাদ নদীর পাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকার বেড়িবাঁধ কয়েক বছর আগে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, তা মেরামত করা হয়নি। ফলে এবারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারের পানি এসব এলাকায় প্রবেশ করে ফসলি জমি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। এতে জেলায় প্রায় পৌনে ছয় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, জেলার একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় জোয়ারের পানির প্রবল ঢেউয়ের কারণে সাগর সৈকতের অন্তত ৫০০ মিটার এলাকা সাগরে বিলীন হয়েছে। জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশের সৈকতে গড়ে তোলা হোটেল কিংস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হোটেলটির পশ্চিম পাশে জেলেদের অন্তত ২০টি বসতঘর পানিতে ভেসে গেছে।

স্থানীয় জেলে সুমন শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক উঁচু ঢেউ এসে আমাদের ঘর ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আমরা পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। জিরো পয়েন্ট এলাকার অন্তত ২০০টি অস্থায়ী দোকানপাট বিলীন হয়েছে।'

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার অনেক ক্ষতি হয়েছে। কুয়াকাটাকে জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা দরকার। এ পর্যটন কেন্দ্র শ্রীহীন হয়ে পড়লে দেশি-বিদেশী পর্যটকগণ এখানে আসতে আগ্রহ হারাতে পারেন।'

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন জানান, চেয়েও এবারের ইয়াস'র প্রভাবে গত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্পান'র চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এতে কুয়াকাটার অনেক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে, কুয়াকাটাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুয়াকাটার বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago