ঢাবি খোলার দাবিতে কফিন মিছিলের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব না নিয়ে দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখায় প্রশাসনের ‘আত্মিক মৃত্যু’ ঘটেছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। প্রতীকী লাশ নিয়ে কফিন মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা। আগামী মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজু ভাস্কর্যে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
রোববার সকালে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘হল-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দাও আন্দোলন’ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ পরবর্তী মিছিল থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৮ জন শিক্ষক।
এদিকে, রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘অনেক জায়গা থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে চাপ আছে। কিন্তু ছাত্র সমাজ বা অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কোনো চাপ নেই।’
এই বক্তব্যের সমালোচনা করে আাসিফ নজরুল বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে বোঝা যায় যে, কোনো চাপ না দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। এটা কি রাজনৈতিক বিষয় যে চাপ সৃষ্টি করে আদায় করতে হবে? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। শিক্ষামন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা মাদক আর পর্নোগ্রাফির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সীমিত পরিসরে খুলে প্রশাসন চাইলে ভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে পরীক্ষা নিতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিত্বহীন প্রশাসন শিক্ষামন্ত্রীর কথা মতো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখেছে।’
ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে, এমনকি রেস্টুরেন্টও। সীমান্ত দিয়ে এখনো মানুষ আসছে, ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক আসছে, এই সবকিছু খোলা রেখে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, ৫ শতাংশের নিচে যখন সংক্রমণ নামবে তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছু যেভাবে খোলা আছে তাহলে তো ৫ শতাংশের নিচে কোনোদিন আসবে না। তাহলে তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও কোনোদিন খোলা হবে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে সকালে নীলক্ষেত-নিউমাকের্ট মোড়ে মানববন্ধন করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগামী ১ জুনের মধ্যে আবাসিক হল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
Comments