‘ভুয়া ওয়ারেন্ট’ যার মূলধন
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক কর্মকর্তার বিভিন্ন কাজ করে দিতেন মো. খন্দকার লতিফুল হক নামে এক ব্যক্তি। সেই কাজ করতে গিয়ে মামলার জিডি ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা পান লতিফুল। এক সময় সিআইডির ওই কর্মকর্তা অবসরে গেলে লতিফুল নিজেকে সিআইডির কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। বিভিন্ন থানায় হওয়া জিডির কপি সংগ্রহ করে সেই অনুযায়ী ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বানাতেন তিনি। যার বিরুদ্ধে ওই জিডি করা হতো, ভুয়া পরোয়ানা দেখিয়ে তার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন লতিফুল।
এসব তথ্য দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান। তিনি জানান, গতকাল রোববার লতিফকে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গতকালই তার বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।
মো. কামরুজ্জামান জানান, লতিফুল হক দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেকে সিআইডির ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে জনগণের কাছে থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছেন। কিছুদিন আগে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের এক খেলোয়াড়ের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের একটি এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানার ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তৈরি করেন। এরপর লতিফুল ও তার সহযোগীরা সেই খেলোয়াড় ও তার বাবার কাছ থেকে ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে নগদ প্রায় দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে আরও অর্থ আদায়ের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগীর সন্দেহ হওয়ায় তিনি সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণকে বিষয়টি জানায়। পরে সিআইডির একটি বিশেষ টিম গতকাল লতিফুলকে খিলগাঁও রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় তার কাছ থেকে বেশকিছু ‘ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’সহ তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লতিফুল প্রায় ১৫ জনের সঙ্গে এ ধরনের প্রতারণা করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
Comments