‘বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বাধা কোথায়?’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ (জাবি) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার দুপুরে জাবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
মানববন্ধনের জাবির আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান সঞ্চালনা করেন। সে সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের অংশ নিতে দেখা যায়।
বক্তারা করোনার টিকাদানের জটিলতার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের না ফেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে সশরীরে পরীক্ষার দাবি জানান।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল আলম বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও ক্যাম্পাস খোলার জন্য যে শর্ত দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মচারী ও অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। তাহলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বাধা কোথায়?’
ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যখন গার্মেন্টস চলছে, যানবাহন চলছে, রেস্টুরেন্ট-রিসোর্ট চলছে, তখন কেন বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না? এখন যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, এর মাধ্যমে মাধ্যমে সরকার একটি বৈষম্য তৈরি করছে। গ্রামের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে ঠিকভাবে আসতে পারছে না। যা অনলাইন ক্লাসের গড় উপস্থিতি দেখেই বোঝা যায়। যেখানে “শতকরা ৭০ভাগ” শিক্ষার্থীরা এ কার্যক্রমের বাইরে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা দেখা যায়, যেখানে তাদের স্বার্থ জড়িত থাকে, যেখানে অর্থ বা লোভ-লালসা জড়িত থাকে। কিন্তু, যেখানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে আছে, সেখানে আমরা প্রশাসনের কোনো স্বেচ্ছাচারিতা দেখতে চাই না। আমরা বলেতে চাই, আপনারা শিক্ষার্থীদর কথা ভাবুন। দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দিন।’
মানবন্ধনে জাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের ৪৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে শুধুমাত্র হতাশা থেকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না থাকায় এটার বড় কারণ।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী প্রথমবার টিকার নিবন্ধন করতে পারেনি, তাদেরকে অতি দ্রুত নিবন্ধনের সুযোগ দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সচল করতে হবে। আমাদেরকে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে ধাবিত করবেন না।’
‘শিক্ষার্থীদের অনেকদিনের দাবি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার, অথচ ক্যাম্পাস বন্ধের দেড় বছর পর শুনছি হল নির্মাণকাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। যা মূলত প্রমাণ করে শুধুমাত্র করোনার কারণেই নয়, বরং যে উন্নয়ন কাজ চলছে, সেখানকার চলমান দুর্নীতির ধারা অব্যাহত রাখতেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে’, বলেন তিনি।
Comments